চীনের পূর্বাঞ্চলীয় ঝেজিয়াং প্রদেশে 'কেকের কাল্পনিক জায়গা' নামে একটি গ্রামীণ কটেজে বসে উৎফুল্ল মনে বেশ কয়েকজন নারী কফির মগ হাতে খেলছেন বিভিন্ন ইনডোর গেম। আর এটি এমন একটি আবাসিক কটেজ যেখানে পুরুষদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এখানে নারীরা কয়েক দিনের জন্য নিজেদের মতো করে সময় কাটাতে পারেন। চীনে সাম্প্রতিক সময়ে দ্রুত বাড়ছে এমন নারীবান্ধব বিভিন্ন আবাসিক ক্লাবের চাহিদা।
চীনে এই ধরনের কটেজে আসা নারীরা ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে নির্ভয়ে কথা বলতে পারেন অন্য নারীদের সঙ্গে। নিজেদের একাকিত্ব দূর করতে বা নয়রানি থেকে মুক্তি পেতেই অনেক নারী এমন নিরাপদ স্থানের খোঁজ করেন। ৪৩ বছর বয়সী ঝাং ওয়েনজিং, যিনি ওই কটেজে অবস্থান করছেন, এএফপিকে জানান, 'শুধু নারীরা আছেন- এমন একটি পরিবেশ নিরাপদ মনে করায় আমাকে। নিজেদের মধ্যে সহজেই অনেক বিষয় শেয়ার করতে পারি আমরা।' একই কথা বলেন ২৮ বছরের ফাংইয়ান। তিনি জানান, 'এখানে আমি অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করি পুরুষদের অনুপস্থিতিতে।'
চীনে বর্তমানে ক্রমশ বাড়ছে নারীদের জন্য নির্দিষ্ট জিম, হোস্টেল, কো-ওয়ার্কিং স্পেসের চাহিদাও।নারীরা তাদের আর্থিক সক্ষমতা ব্যবহার করে মানসিক প্রশান্তি ও শারীরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পথ খুঁজছেন। 'কেকের কাল্পনিক জায়গা'য় ভাড়া ৩০ ইউয়ান (৪ দশমিক ১৭ ডলার) প্রথম দিন থাকার জন্য। তবে ভাড়া বেড়ে দাঁড়ায় ৮০ ইউয়ানে চতুর্থ দিন থেকে। এই কটেজের প্রতিষ্ঠাতা ৩০ বছর বয়সী চেন ইয়ানি, যিনি ‘কেকে’ নামেও পরিচিত। তিনি জানান, কর্মস্থলে পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে খারাপ অভিজ্ঞতা থেকেই তার মাথায় এ ধরনের নারীবান্ধব আশ্রয়ের ধারণা আসে। চেন ইয়ানি বলেন, 'আমি বিভিন্ন মাত্রার হয়রানির মুখোমুখি হয়েছি। এমনকি এমন পর্যায়েও গিয়েছিল যে কাজ চালিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। তখন ভাবতে শুরু করি, একটি নিরাপদ এবং স্বস্তিদায়ক জায়গা কেমন হতে পারে? যেখানে থাকবে না কোনো আতঙ্ক!' এরপর তিনি সাংহাই থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে হাংঝোউয়ের শহরতলির একটি পুরোনো বাড়ি কিনে সংস্কার করেন। পরে ইনস্টাগ্রামে ঘোষণা দেন—এই স্থানটি কেবল নারীদের জন্য, যেখানে স্বাধীনভাবে ও নির্ভয়ে থাকতে পারবেন তারা।
এছাড়াও চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে দিনদিন বাড়ছে 'কেকের কাল্পনিক জায়গা'র মতো আরো বিভিন্ন ক্লাবের সংখ্যা।
বিডি প্রতিদিন/এএম