জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পরিস্থিতি দিনদিন আরও জটিল হচ্ছে। কলমবিরতি পালন, শাটডাউন ও মার্চ ফর এনবিআর ঘোষণাতে কার্যত স্থবির হয়ে পড়ছে এনবিআরের কার্যক্রম। পরিস্থিতি নিরসনে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে গতকাল আলোচনার কথা থাকলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার ঐক্য পরিষদ। গতকাল দিনভর রাজস্ব ভবন ঘিরে রাখে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্ট গার্ড। তারা কার্যালয় কাউকে ঢুকতে ও বের হতে দেয়নি। অচলাবস্থা নিরসনে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
গতকাল ঢাকার আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘সার্বিক পরিস্থিতিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ মনে করে, প্রধান উপদেষ্টার সানুগ্রহ হস্তক্ষেপ ছাড়া এ অচলাবস্থার নিরসন হবে না। তাই এই অচলাবস্থা নিরসনে আমরা প্রধান উপদেষ্টার সানুগ্রহ হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ সভাপতি অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহাম্মদ তারেক রিকাবদার ভবনে ঢুকতে বাধা পেয়ে মূল ফটকেই বসে পড়েন। পরে বাইরে থাকা অন্য কর্মীরাও ফুটপাত ও সড়কের একটা অংশে বসে পড়েন। তাদের সঙ্গে যোগ দেন অন্যরা। এরপর বিকাল ৪টার দিকে মূল ফটকের সামনেই সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। সেখানে পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘আপনারা দেখছেন আজ বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করে এনবিআরের তিনটি গেট বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এনবিআরের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী আজ এনবিআরে ঢুকতে পারছে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’ এদিকে গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, ডিজি-সিআইসি, কর গোয়েন্দা ইউনিটের কমিশনার এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জড়িয়ে ভুয়া মোবাইল স্ক্রিনশট তৈরি করে সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্যসংবলিত গুজব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। বিদেশে নিবন্ধন করা ফোন নম্বর এবং এআই ব্যবহার করে ভুয়া স্ক্রিনশট তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী এ ধরনের মিথ্যা গুজব ছড়ানো ফৌজদারি অপরাধ। যে বা যারা এ কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে আন্দোলন প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। এ ছাড়া এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আশা করি আজ (গতকাল) রাতের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। গতকাল রাতে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বৈঠক শেষে তাঁরা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। অবশ্য রাত সাড়ে ১১টার দিকে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য কোনো সমাধান হয়নি।