মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, বৈধ মার্কিন ভিসাধারী প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি বিদেশির নথি তারা যাচাই-বাছাই করছে। উদ্দেশ্য হলো—কেউ অভিবাসন আইন ভঙ্গ করেছেন কি না, কিংবা ভিসা বাতিলযোগ্য অপরাধে জড়িত কি না তা খুঁজে বের করা।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেওয়া লিখিত জবাবে দপ্তর জানায়, সব ভিসাই “বারবার যাচাই-বাছাই” করা হচ্ছে। এতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নথি, অভিবাসন রেকর্ড এবং ভিসা ইস্যুর পর প্রকাশ পাওয়া নতুন তথ্যও অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণের পর অবস্থান, অপরাধে জড়িত থাকা, জননিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়ানো বা সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহযোগিতা—এসব বিষয়কে অযোগ্যতার ইঙ্গিত হিসেবে ধরা হচ্ছে।
এদিকে খবর প্রকাশের পরই বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ঘোষণা দেন, বাণিজ্যিক ট্রাকচালকদের জন্য সব কর্মভিসা ইস্যু স্থগিত করা হবে। তিনি এক্সে লিখেছেন, বিদেশি ট্রাকচালকরা “আমেরিকানদের জীবনের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে এবং দেশীয় ট্রাকচালকদের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত করছে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অভিবাসনবিরোধী কঠোর দমননীতি কার্যকর করেছেন। এর ফলে কেবল অবৈধ অভিবাসী নয়, বৈধ কাগজপত্রধারীরাও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছেন। নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, এ গতিতে চলতে থাকলে ২০২৫ সালে প্রায় ৪ লাখ মানুষ বহিষ্কৃত হতে পারেন।
সরকারি সংস্থাগুলো নজিরবিহীনভাবে রেস্টুরেন্ট, নির্মাণস্থল, কৃষিখামার ও আদালতে অভিযান চালাচ্ছে। এমনকি বৈধ হওয়ার প্রক্রিয়ায় দেওয়ানি কার্যক্রমে অংশ নেওয়া অনেকেই গ্রেপ্তার হচ্ছেন। পাশাপাশি “হিউম্যানিটারিয়ান প্যারোল” ও “টেম্পোরারি প্রোটেক্টেড স্ট্যাটাস (টিপিএস)” বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।
শিক্ষার্থী ভিসাধারীরাও বাদ যাচ্ছেন না। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৬ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে। দপ্তরের দাবি—তাঁরা আইন ভঙ্গ করেছেন বা সন্ত্রাসবাদ সমর্থন করেছেন। তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অনেক শিক্ষার্থী কেবল ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বা মতামতধর্মী লেখা প্রকাশের কারণে ভিসা হারিয়েছেন। এমনকি কোনো আন্দোলনে না জড়ানো শিক্ষার্থীর ভিসাও বাতিল হয়েছে।
সূত্র : অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস
বিডি প্রতিদিন/আশিক