৯ থেকে ১০ মাসের মধ্যে ১৮ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলেছেন বলিউড অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিতের চিকিৎসক স্বামী শ্রীরাম নেনে। ওজন কমানো শুধু নয়, তার কোলেস্টেরল-ট্রাইগ্লিসারাইড সব কিছুই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।
শ্রীরাম নেনে বরাবরই স্বাস্থ্যসচেতন। শরীর ভালো রাখার খুঁটিনাটি দিয়ে প্রায়ই ইনস্টাগ্রামে ভিডিও পোস্ট করেন তিনি। সেখানে হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখার নিয়ম, ডায়েট নিয়ে নানা তথ্যও থাকে। নেনে জানিয়েছেন, নিজের ওপর প্রয়োগ করে দেখছেন খাদ্যাভ্যাস ঠিক কেমন হলে দ্রুত ওজন কমানো যায়।
বেশি ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাননি। প্রাণিজ প্রোটিন একেবারেই বাদ দিয়েছেন। দুগ্ধজাত খাবারও ছেঁটে ফেলেছিলেন ডায়েট থেকে। পুরোপুরি ভিগান ডায়েট মেনেই এত তাড়াতাড়ি ওজন কমিয়েছেন বলে জানান শ্রীরাম নেনে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর পরেই চোখ কপালে ওঠে। রিপোর্ট খুব একটা ভালো আসেনি। নানা রকম সমস্যা ধরা পড়ে। পাশাপাশি তার শরীরে মেদও জমছিল। তাই সঙ্গে সঙ্গেই নিজের খাদ্যাভ্যাস বদলের কথা ভাবেন।
নেনের কথায়, প্রাণিজ প্রোটিন যেমন বন্ধ করেছেন, তেমনই মদ্যপানও ছেড়ে দিয়েছেন। আর তাতেই তার শরীরের ১৬ শতাংশ মেদ ঝরে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
তিনি জানিয়েছেন, তার বাবার ৫৫ বছর বয়স থেকে ডায়াবেটিস। খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণে রেখে ৮৬ বছর বয়সেও তিনি ফিট। ডায়াবিটিস-জনিত কোনও অসুখই ধরেনি তার।
এখন কথা হলো, ওজন কমানোর জন্য ভিগান ডায়েট কি সত্যিই কার্যকরী? সকলেই কি এমন ডায়েট করতে পারেন?
‘ভিগান’ খাদ্যাভ্যাস একটি স্বতন্ত্র জীবনশৈলী। মাছ, মাংস তো বটেই, ডিম বা দুগ্ধজাত কোনও খাবারও খাওয়া যায় না এই খাদ্যাভ্যাসে। এ দেশে ভিগান খাদ্যাভ্যাস ক্রমশই জনপ্রিয় হচ্ছে। আলিয়া ভাট, কঙ্গনা রনৌত, সোনম কাপুর, অমিতাভ বচ্চন, রীতেশ দেশমুখের মতো অনেক তারকাই এমন খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত।
ভিগান ডায়েট করলে অনেক নিয়ম মেনে চলতে হয়। যেহেতু প্রাণিজ প্রোটিন ও দুগ্ধজাত খাবার একেবারেই বর্জন করা হয়, তাই ডায়েটে এমন খাবার রাখতেই হবে, যাতে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও সব রকম ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হয়। এমনই জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী। ভিগান ডায়েটেও কিন্তু ভুল খাবার বাছলে ওজন বাড়তে পারে।
পুষ্টিবিদের মতে, মাছ, মাংস, ডিম যেহেতু খাচ্ছেন না, তাই ডাল, বাদাম, সয়াবিন, বিন্স খেতে হবে পরিমাণমতো। শরীরে আয়রনের মাত্রা ঠিক রাখার জন্য কাবলি ছোলা, পালংশাক, কুমড়োর বীজ ডায়েটে রাখতে হবে। খেতে হবে ভিটামিন সি-যুক্ত ফল। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ঘাটতি যাতে না হয়, সেজন্য তিসির বীজ, আখরোট, চিয়া বীজ, কাঠবাদাম খেতে হবে নিয়মিত। ঘি-এর মধ্যেও প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ থাকে। ম্যাগনেশিয়ামের জন্য কলা, পালংশাক রাখতেই হবে ডায়েটে। দেখতে হবে যাতে ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতি না হয়, তা হলেই শরীরের জোর কমবে। সেজন্য ছোলা, বিট, শুকনো কুমড়োর বীজ, পেস্তা, খেজুর— এই জাতীয় খাবার রাখতে হবে ডায়েটে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ