লালমনিরহাটের পাটগ্রামে চাঁদাবাজির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত দুই শ্রমিককে থানার হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নিতে সংঘবদ্ধ হামলা, ভাঙচুর ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পৃথক দুটি থানায় দুটি মামলা হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপি ও যুবদলের দুই নেতাকে বহিষ্কার করেছে সংশ্লিষ্ট সংগঠন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাস একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। চাঁদাবাজির অভিযোগে মমিনপুর এলাকার লিয়াকত আলীর ছেলে বেলাল হোসেন ও মির্জারকোর্ট এলাকার সামছুল হকের ছেলে সোহেল রানাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সাজার পর তাদের পাটগ্রাম থানায় নেওয়া হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
সাজাপ্রাপ্তদের সহযোগীরা সংঘবদ্ধ হয়ে পাটগ্রাম যায়। প্রথমে তর্ক ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এরই এক পর্যায়ে থানায় হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নেয় তারা। হামলার সময় ওই চক্রটি থানায় ইটপাটকেল ছোড়া, দরজা-জানালা ও ল্যাপটপ ভাঙচুর এবং আসবাবপত্র তছনছের করে। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার পাটগ্রাম থানায় ২৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও অনেককে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
পাটগ্রামে উত্তেজনার মধ্যে হাতীবান্ধা থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ চাওয়া হলেও, হামলাকারীরা থানা চত্ত্বর অবরোধ করে রাখায় তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। এ অবস্থায় হাতীবান্ধা থানায় সরকারি কাজে বাধাদান ও পুলিশের গতিরোধের অভিযোগে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলায় হাতিবান্ধা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক নুরুন্নবী কাজলসহ আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঘটনার পর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে পাটগ্রাম উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মো. জাহাঙ্গীর মোস্তাফিজ চপলকে বহিষ্কার করে লালমনিরহাট জেলা বিএনপি। অন্যদিকে, পাটগ্রাম পৌর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদ হোসেনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় যুবদল।
যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের আদর্শ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক, আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। আইন ভঙ্গকারীদের কোনো দল হয়না। সিসিটিভি ফুটেজ, ভিডিও ও অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে আরও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
বিডি প্রতিদিন/এএ