তরুণ প্রজন্মের দর্শকপ্রিয় অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব। সম্প্রতি ক্যাপিটাল ড্রামাতে মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত নাটক ভিকি জাহেদের ‘খোয়াবনামা’। এটি প্রকাশের পর বেশ সাড়া পাচ্ছেন এই অভিনেতা। তাঁর সঙ্গে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
‘খোয়াবনামা’ ক্যাপিটাল ড্রামায় প্রকাশের পর বেশ প্রশংসা পাচ্ছেন। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?
নাটকটির পেছনে অনেক শ্রম দিয়েছি। তাই তার ফল পাচ্ছি বোধহয়। আসলে এ পর্যন্ত যে পরিমাণ ফিডব্যাক পেয়েছি, লাস্ট কবে এমন ফিডব্যাক পেয়েছি সেটা আমি মনে করতে পারছি না। হয়তো আমার জীবনের প্রথম নাটক ‘অলটাইম দৌড়ের উপর’ করার পর পেয়েছিলাম। কিন্তু খোয়াবনামা যেরকম ফিডব্যাক আমাকে এনে দিচ্ছে, আমার ডেডিকেশন নিয়ে যে পরিমাণ প্রশংসা করেছে মানুষ, এটা আমার জন্য নতুন করে কিছু পাওয়া। এই পাওয়া থেকে আমি নতুন করে, নতুনভাবে নিজেকে মানুষের মাঝে তুলে ধরতে পেরেছি। অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা ক্যাপিটাল ড্রামার কাছে, যারা আমাকে এরকম একটি স্ক্রিপ্টে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। কৃতজ্ঞতা ভিকি জাহেদকে, যে এমন সুন্দর একটি স্ক্রিপ্ট আমাকে উপহার দিয়েছেন, যেটিতে আমি চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে পেরেছি এবং ধন্যবাদ তানজিন তিশাকে, যে আমাকে প্রচুর হেল্প করেছেন প্রতিটি কাজে।
এ কাজটি করার পেছনের গল্প বা অভিজ্ঞতা একটু জানতে চাই...
অলরেডি অনেকবার বলেছি, তারপরও বলছি আরেকবার। আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেই শট দিতে। কোনো ডামি ব্যবহার করি না। নাটকটির শুটিং করতে গিয়ে মধ্যরাতে জ্যান্ত সাপের সঙ্গে কবরে ঘুমাতে হয়েছে আমাকে। চরিত্রের প্রয়োজনেই এ রিস্ক নিয়েছি। ডামি শট নেওয়া যেত কিন্তু এটি আমার পছন্দ হতো না। আসলে ওই মুহূর্তটায় বিভিন্ন বিষয় একসঙ্গে কাজ করছিল। কাফনের কাপড় পরা কবরের ভেতর থেকে বাইরের দৃশ্যটা আসলে অন্যরকম। ওয়াইড এঙ্গেল শটে আমি দেখতে পাচ্ছি, চারপাশের লোকজন কবর দেওয়ার প্রিপারেশন নিচ্ছে। যেটা আমাদের সবারই বাস্তবতা। হয়তো একদিন ওইটাই শেষ ঠিকানা হবে। হয়তো কী, ওইটাই শেষ ঠিকানা আমাদের। সো, ওই একটা ভয়াবহতা ওভারকাম করার আগেই আমি দেখছিলাম যে, পেছনের লোকজন বলছে, ‘ওই সাপ রেডি, সাপ রেডি’ বলে চিৎকার করছে। তখন একটা ভয় শেষ হওয়ার পরেই আরেকটা ভয় চলে আসছিল। এই কথাগুলো মনে হলেই এখনো লোম দাঁড়িয়ে যায়। অন্যদিকে বৃদ্ধের লুক নিতে গিয়ে সারা দিন প্রস্থেটিক মেকআপে থাকতে হয়েছে। এটি সহজ কাজ ছিল না। মুখে ফোসকা পড়ে গিয়েছিল। তবে সব কিছু মিলিয়ে মনে হচ্ছে কষ্ট সার্থক। দর্শক দেখছেন, ভালোবাসা জানাচ্ছেন, এটাই প্রাপ্তি।
‘খোয়াবনামা’ করার পর রাত কি দুঃস্বপ্নে কেটেছে?
আমি খুবই সুখী মানুষ। কোন দুঃস্বপ্ন দেখি না। খুব নির্ঝঞ্ঝাট মানুষ। এক ঘুমে রাত পার করি। সো, দুঃস্বপ্ন দেখা আমার অভ্যেস নেই। এই কাজটি করার পর থেকে দুঃস্বপ্নের চেয়ে বেশি জেগে জেগে অনেক স্বপ্ন দেখি।
কাজে কোন বিষয়ের ওপর নজর দেন?
‘ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না’- অনেক বড় কথা। ছোটবেলায় শিখেছিলাম। তো, সেটাই অ্যাপ্লাই করার চেষ্টা করছি। প্রতিটি কাজে অনেকে ভেবে ভেবে স্ক্রিপ্ট ও রিলিজ টাইম চুজ করা, স্টোরিটা অর্ডিয়েন্স কীভাবে নেবে, কীভাবে প্রেজেন্ট করব-ওভারঅল প্ল্যানিং করে আগানোর চেষ্টা করছি।
একটা সুখবর শুনেছি...
ওহ্। একটা ফুটওয়্যার ব্যান্ডের শুভেচ্ছাদূত হওয়ার কথা রয়েছে, স্টেপ ফুটওয়্যার। ১৩ তারিখে একটি পাঁচতারকা হোটেলে এর স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে এই প্রতিষ্ঠানের ৫টি প্রডাক্ট লঞ্চিংয়ের মাধ্যমে। দেখা যাক।
৬ সেপ্টেম্বর প্রয়াত নায়ক সালমান শাহের প্রয়াণ দিবস...
যদি এত দিনে সালমান শাহ বেঁচে থাকতেন, তাহলে আমাদের পুরো ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা অন্যরকম হতো। যদিও আমি তার সময়ে অনেক ছোট ছিলাম। যখন তুলনা করতে দেখি যে, উনি যখন অভিনয় করতেন তখন বলিউডের অবস্থা কেমন ছিল, আর তখন ঢালিউডের অবস্থা কেমন ছিল। আমি বলব, অলমোস্ট কাছাকাছি ছিল। উনি চলে যাওয়ার পরে আমরা অনেক পিছিয়ে গিয়েছিলাম। যদিও আমি সিনেমার মানুষ না। সিনেমার মানুষ নিয়ে বলা আমার মুখে শোভা পায় না। তবুও বলব, উনি বেঁচে থাকলে হয়তো সব কিছু অন্যরকম হতো। এই আফসোস আজীবন থাকবে।