ফের হঠাৎ বন্যার অশনিসংকেত দেখা দিয়েছে। কদিনের টানা বৃষ্টিতে তলিয়েছে দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা। এ সময় কিছু আগাম সতর্কতা গ্রহণ করা জরুরি। বন্যার পানি বাড়ির কাছাকাছি আসার আগেই পরিবার-পরিজন ও পোষা প্রাণী নিয়ে স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্র বা উঁচু নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন। বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়ার সময় অবশ্যই গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেবেন। বন্যার আভাস পেলে মুড়ি, চিড়া, গুড়, চিনি বা শুকনো খাবার সংরক্ষণ করুন। বিশেষ করে বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি সংরক্ষণের জন্য চৌবাচ্চার ব্যবস্থা করুন। এ ছাড়া সহজে বহনযোগ্য চুলা ও রান্না করার জন্য শুকনো জ্বালানির ব্যবস্থা রাখুন। বাড়ির বৃদ্ধ, শিশু, শারীরিক প্রতিবন্ধী বিশেষ করে গর্ভবতী নারীর দিকে বিশেষ নজর রাখুন। এ ছাড়া টাকা, জমির দলিল, শিক্ষা সনদসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সর্বোচ্চ নিরাপদে রাখুন। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের ওষুধ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সংরক্ষণে রাখুন।
বিশুদ্ধ পানি পান : মূলত বন্যার সময় ময়লা-আবর্জনা, মানুষ ও পশুপাখির মলমূত্র ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা একাকার হয়ে যায় এবং এসব উৎস থেকে জীবাণু ছড়ায়। টিউবওয়েলের বিশুদ্ধ পানি পাওয়া না গেলে বিভিন্ন জলাশয়ের পানি ফুটিয়ে বা বিশুদ্ধকরণ ওষুধ প্রয়োগের পর পান ও ব্যবহার করা যেতে পারে।
ডায়রিয়া হলে করণীয় : বন্যার সময় ডায়রিয়া বেশি দেখা দেয়। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। লবণ ও পানির অভাব পূরণ করাই এর একমাত্র চিকিৎসা। শরীর থেকে যে পরিমাণ পানি বেরিয়ে যায়, তা যদি দ্রুত ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হয়, মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে ও শরীরে লবণপানির ঘাটতি দেখা দিলে মৃত্যু হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।
বন্যায় টিউবওয়েল ডুবে গেলে : যেসব টিউবওয়েল বন্যায় ডুবে গেছে, সেগুলোর পানি পরিশোধন না করে পান করবেন না। নিজেরাই করতে পারেন এ কাজ। ১০০ গ্রাম ব্লিচিং পাউডারের সঙ্গে দেড় থেকে দুই লিটার পানি একটি পাত্রে ভালো করে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এরপর টিউবওয়েলের মূল অংশটি পাইপ থেকে খুলে পাইপের মধ্যে সেই মিশ্রণটি ঢেলে দিন। এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর টিউবওয়েলের মূল অংশটি লাগিয়ে অন্তত আধা ঘণ্টা হাতল চেপে পানি ফেলে দেওয়ার পর পান ও ব্যবহারযোগ্য পানি পাওয়া যাবে। -সংগৃহীত