বরগুনার তালতলীতে জমির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে মরিয়ম বেগম নামে এক নারী নিজের মাথা কেটে নাটক সাজিয়ে সৎ ভাইদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন এমন অভিযোগ উঠেছে। ওই মামলার প্রতিবাদে এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের জয়ালভাঙ্গা গ্রামে ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন হয়। এতে প্রায় তিন শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
জানা গেছে, পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের জয়ালভাঙ্গা গ্রামের মৃত. আমজেদ ফরাজীর ছোট স্ত্রীর মেয়ে মরিয়ম বেগম। দীর্ঘদিন ধরে তার সৎ ভাই নাসির ফরাজী, সেলিম ফরাজী ও চুন্নুু ফরাজীর সঙ্গে জমির সীমানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ ঘটনার জের ধরে সম্প্রতি ওই জমির সীমানা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।
পরে চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর মরিয়ম বেগম নিজেই নিজের মাথা ‘কেটে ক্ষত সৃষ্টি করে’ নাটক সাজিয়ে সৎ তিন ভাইসহ ৫ জনকে আসামি করে আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। এই মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ ও ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘মরিয়ম বেগম নিজেই নিজের মাথা ‘কেটে’ নাটক সাজিয়ে সৎ ভাইদের বিরুদ্ধে সাজানো মামলা করেছেন। এতে নিরপরাধ মানুষ মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তিনি নারী হওয়ার সুযোগ নিয়ে এলাকার মানুষের বিরুদ্ধে বারবার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছেন। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, এই সাজানো মামলার বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করা হোক। একই সঙ্গে নির্দোষ লোকজনদের হয়রানি থেকে মুক্তি দেওয়া হোক।’
মামলার প্রধান সাক্ষী মারজিয়া বেগম বলেন, ‘আমি মরিয়মের চিৎকার শুনে তার ঘরে যাই। দেখি সে বোকরা পড়ে আছে। এময় তার শরীরে বা মাথায় কোনো আঘাতের চিহ্নও দেখিনি। যদিও দুই পক্ষের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে।’
আরেক সাক্ষী কহিনুর বেগম বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। আমি কিছুই জানি না। পরে গ্রামের লোক মুখে শুনেছি মামলা হয়েছে। সেখানে আমাকে স্বাক্ষী রাখা হয়েছে। মরিয়মের মাথা কাটার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমি আদালতে মিথ্যা সাক্ষী দিতে পারব না।’
প্রত্যক্ষদর্শী জাকির ফরাজী বলেন, ‘দুই পক্ষের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু মরিয়মের মাথায় কেউ আঘাত করেনি। এটি সম্পূর্ণ সাজানো নাটক। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা হোক।’
তালতলী থানার ওসি মো. শাহজালাল বলেন, ‘কাউকে অন্যায়ভাবে হয়রানি করার সুযোগ নেই। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে, তদন্ত সাপেক্ষে আদালতে অভিযোগ দাখিল করা হবে।’