দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর ফসলের মাঠে কিছুদিন পরই আমন ধান কাটার মৌসুম শুরু হবে। এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানের আমন ধানে দেখা দিয়েছে মাজরা ও কারেন্ট পোকার আক্রমণ। এতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় চাষিরা।
মৌসুমের শেষ সময়ে এসে পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। বেশ কিছু জমিতে ধানগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। ফসল রক্ষায় কৃষকরা মাঠে মাঠে ওষুধ স্প্রে করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ফলে কৃষকের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে।
কৃষকরা জানান, কারেন্ট পোকা ধানের গোড়ার নিচের অংশ কেটে দিচ্ছে, ফলে পাতা শুকিয়ে গাছ মারা যাচ্ছে। অন্যদিকে মাজরা পোকার আক্রমণে ধানের শীষ পরিপক্ব হওয়ার আগেই পাকা দেখাচ্ছে। কিছু কিছু জমিতে ধানের গোড়া পচে গিয়ে গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় তারা চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন।
মাদলিয়া হাট এলাকার কৃষক আবু সালেহ ও আলাদীপুর এলাকার কৃষক মকবুল হোসেন বলেন, ‘জমিতে পোকার আক্রমণে আমরা চরম সমস্যায় পড়েছি। ধানের শীষ বের হওয়ার সময়েও জমিতে কীটনাশক ছিটাতে হচ্ছে। প্রতিদিন নানা ধরনের কীটনাশক ছিটালেও পোকার হাত থেকে রেহাই মিলছে না। এখন ফসল ঘরে তোলা নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছি।’
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফ আবদুল্লাহ বলেন, ‘আবহাওয়ার প্রভাবের কারণে এবার পোকার আক্রমণ কিছুটা বেশি দেখা দিয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ে উঠান বৈঠকসহ কৃষকদের সচেতন করতে আমরা কাজ করছি। ইতোমধ্যে অনেক এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে (৩৪) সুগন্ধি ধান যেহেতু শেষে পাকে, তা নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন,‘কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে মাঠকর্মীরা সার্বক্ষণিকভাবে কৃষকদের সঙ্গে কাজ করছে। আমি নিজেও বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। কৃষকদের ভালো মানের কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ফুলবাড়ী উপজেলায় ১৮ হাজার ১৪৮ হেক্টর জমিতে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ও উফশী জাতের তেজগোল্ড, ব্রি-৯০, বিনা-১৭, সম্পাকাটারি, জাঁপাড়ি, ধানিগোল্ডসহ বিভিন্ন আগাম জাতের ধান ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। আগাম জাতের এসব আমন ধান কাটা-মাড়াই প্রায় শেষের পথে।
বিডি-প্রতিদিন/আশফাক