পার্লামেন্টে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর সংযুক্তিকরণ বিল পাস করায় ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে গাজা শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা ব্যাহত হতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
তিনি বলেছেন, ইসরায়েলি সংসদে পশ্চিম তীর সংযুক্তিকরণের প্রস্তাব আনা এই মুহূর্তে সমর্থনযোগ্য নয়। সংযুক্তিকরণের প্রচেষ্টা শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি তৈরি করবে। ইসরায়েল সফরে যাওয়ার আগে বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি ইসরায়েলি পার্লামেন্টে কট্টর-ডানপন্থী কয়েকজন সংসদ সদস্য প্রতীকীভাবে একটি বিলের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছেন, যা ইসরায়েলের সঙ্গে পশ্চিম তীর সংযুক্তিকরণের পথ খুলে দিতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে বিব্রত করতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
১৯৬৭ সাল থেকে ইসরায়েলের দখলে থাকা পশ্চিম তীরকে ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যৎ স্বাধীন রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে দাবি করে আসছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত-আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত গত বছর রায়ে ইসরায়েলের দখল অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
নেতানিয়াহু আগে পশ্চিম তীর সংযুক্তিকরণের পক্ষে কথা বললেও, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় তিনি তা বাস্তবায়নের পথে এগোননি। তবে তার জোট সরকারের অতিরাষ্ট্রবাদী দলগুলো বারবার প্রকাশ্যে সংযুক্তিকরণের দাবি জানিয়ে আসছে।
২৫-২৪ ভোটে বিলটির প্রাথমিক অনুমোদন হয়েছে। তবে ১২০ আসনের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন পাওয়ার সম্ভাবনা এখনও অনিশ্চিত। প্রধানমন্ত্রী চাইলে প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত বা ঠেকাতে পারেন।
ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নেসেটের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি ভূমির ওপর কোনও সার্বভৌমত্ব নেই। ইসরায়েল এখন পর্যন্ত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে প্রায় ১৬০টি বসতি স্থাপন করেছে, যেখানে প্রায় সাত লাখ ইহুদি বসবাস করছে। একই অঞ্চলে প্রায় ৩৩ লাখ ফিলিস্তিনি বসবাস করছে। আন্তর্জাতিক আইনে এসব বসতি অবৈধ বলে ঘোষিত।
রুবিও বলেন, পশ্চিম তীর সংযুক্তিকরণ শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য বিপরীত ফল বয়ে আনবে এবং বর্তমান যুদ্ধবিরতির অগ্রগতি ঝুঁকিতে ফেলবে। যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং দুই বিশেষ দূতের সফরের পরপরই ইসরায়েল সফরে যাচ্ছেন রুবিও। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন গাজার শান্তি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ শুরু করার চেষ্টা করছে।
প্রথম ধাপে যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলি বাহিনীর আংশিক প্রত্যাহার ও মানবিক সহায়তা প্রবাহ এরই মধ্যে কার্যকর হয়েছে। যদিও দুই পক্ষই একে অপরকে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ করেছে। তবে যুদ্ধবিরতি এখনও টিকে আছে। রুবিও বলেন, প্রতিদিনই এর প্রতি হুমকি তৈরি হচ্ছে, কিন্তু আমরা নির্ধারিত সময়সূচির চেয়ে এগিয়ে আছি। সপ্তাহান্তে চুক্তি টিকে থাকায় আমি আশাবাদী।
দ্বিতীয় ধাপে গাজায় একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন, আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন, ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং হামাসের নিরস্ত্রীকরণের পরিকল্পনা রয়েছে। সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/একেএ