জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, ‘কয়েকজন উপদেষ্টার ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। প্রথম দিন গিয়েই আমরা কারও অপসারণ চাইনি। আমরা সময় দিচ্ছি। যদি ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তাহলে আমরা যা যা করার, সেগুলোর ব্যাপারে চিন্তা করব।’ গতকাল সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
ডা. তাহের বলেন, ‘আমরা বলেছি, কিছু লোক আপনাকে (প্রধান উপদেষ্টা) বিভ্রান্ত করে। আপনার প্রতি আমাদের আস্থা আছে। কিন্তু আপনার কিছু লোক আপনাকে বিভ্রান্ত করে এবং ওরা কোনো একটা দলের পক্ষে কাজ করে বলে আমরা মনে করি। তাদের ব্যাপারে আপনাকে হুঁশিয়ার থাকা দরকার।’ নির্বাচনের দিন গণভোট হলে আইনগত জটিলতা তৈরি হবে জানিয়ে আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট না হলে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। দেশের কল্যাণের জন্য কিছু টাকা অতিরিক্ত খরচ হলেও গণভোট আগে করা ছাড়া উপায় নেই।
তিনি বলেন, গণভোটে বিএনপি রাজি হলেও নির্বাচনের দিনই চেয়ে জটিলতা সৃষ্টি করছে। কারণ মৌলিক বিষয় গণভোট। তার সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। আসলে বিএনপি গণভোট চায়নি। জনগণের চাপে রাজি হয়েছে। কিন্তু প্যাঁচ লাগিয়ে রেখেছে। আমরা চাই নভেম্বরের শেষে গণভোট। পরে জাতীয় নির্বাচনের জন্য যথেষ্ট সময় থাকবে। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য প্রশাসনে প্রয়োজনীয় রদবদলের আহ্বান জানালে প্রধান উপদেষ্টা আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান জামায়াতের নায়েবে আমির। তিনি বলেন, ‘প্রশাসন, পুলিশের মধ্যে ৭০ শতাংশ লোক একটি নির্দিষ্ট দলের প্রতিনিধিত্ব করে। এদের দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে লটারির মাধ্যমেও পরিবর্তন করতে পারেন। তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছি। এটা বাস্তবায়নের জন্য প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। তিনি আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন। আমরা বলেছি, একটি আদেশের মাধ্যমে এটাকে সাংবিধানিক মর্যাদা দিতে হবে। যদিও এটা সংবিধানের অংশ নয়। তবে এরকম পরিস্থিতিতে সরকারপ্রধান আদেশ দিতে পারেন। আশা করি উনি এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে তাহের বলেন, ‘এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কারণ বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। আমরা মনে করি, এ বিষয়ে এখন কথা বলাটা ঠিক নয়। তিনি বলেন, নোয়াখালীতে ছাত্রশিবিরের কোরআন প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে বিএনপির হামলার বিষয়টি আমরা প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। আমরা বলেছি, নির্বাচনের আগেই যদি এরকম পরিস্থিতি হয় তাহলে নির্বাচনের সময় কী হবে? এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাসুম ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।