স্বাধীনতা লাভের পর ৫৪ বছরেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার ছেত্রা নদীর ওপর গড়ে ওঠেনি সেতু। তাই নদীর দুই পাড়ের দুটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের ভরসা ৭০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে বাঁশের সাঁকো। শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়ে দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে। জরুরি প্রয়োজনে অসুস্থ, বয়োবৃদ্ধ ও গর্ভবতী নারীদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া যায় না। অনুন্নত যোগাযোগব্যবস্থার কারণে ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের ২০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। তারা পিছিয়ে আছে শিক্ষা, কৃষিসহ আর্থসামাজিক উন্নয়ন সব ক্ষেত্রেই। জনপ্রতিনিধিরা বহুবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অদ্যাবধি তার বাস্তবায়ন হয়নি। সরেজমিন দেখা যায়, অরুয়াইল-পাকশিমুল ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছেত্রা নদীর ওপর দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ৭০০ ফুট দীর্ঘ ও ৫ ফুট প্রস্থের বাঁশের সাঁকো। এর এক পাশে অরুয়াইল, অন্য পাশে রানিদিয়া গ্রাম। নড়বড়ে এ সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষের চলাচল। শুষ্ক মৌসুমে নিজেদের অর্থায়নে গড়া বাঁশের সাঁকোই ভরসা লক্ষাধিক মানুষের। কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না নড়বড়ে এই সাঁকো দিয়ে। কার্তিক মাস থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত এ আট মাস গ্রামবাসী এ সাঁকো দিয়ে চলাচল করে। বর্ষা মৌসুমে চলাচল করতে হয় নৌকায়। এতে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি গ্রামবাসীর ভোগান্তির যেন শেষ থাকে না। স্থানীয়দের আক্ষেপ, বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি। এছাড়াও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। শিক্ষা, কৃষিসহ আর্থসামাজিক উন্নয়ন থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা মনসুর আহমেদ বলেন, ছেত্রা নদীর ওপর একটি সেতুর দাবি দীর্ঘদিনের। বিগত সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। পাকা সেতু না থাকায় গ্রামবাসী ও শিক্ষার্থীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে অসুস্থ ও গর্ভবতী নারীদের দ্রুত হাসপাতালে নিতে চরম সমস্যায় পড়তে হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন, জনদুর্ভোগ লাঘবে এবং হাওরবেষ্টিত এই এলাকার জীবনমান উন্নয়নে জনগুরুত্ব বিবেচনা করে ছেত্রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণে একটি প্রকল্পের প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে। যা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন পেলে স্থায়ী সেতু নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হবে।