ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে অসংখ্য স্থায়ী-অস্থায়ী স্থাপনা। এ কারণে এ মহাসড়ক সংকুচিত হচ্ছে। প্রশাসন স্থায়ী-অস্থায়ী স্থাপনা একদিকে উচ্ছেদ করলেও অন্যদিকে আবার গড়ে তোলা হয়। এ ছাড়া যত্রতত্র দাঁড়ানো থাকে অবৈধ তিন চাকার যানবাহন। এতে বাড়ছে যানজট ও দুর্ঘটনা। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এ মহাসড়কে চলাচলকারী হাজার হাজার যাত্রী ও চালককে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার অন্তর্গত ১০৫ কিলোমিটার। জেলার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর বাজার, ইলিয়টগঞ্জ, চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া, চান্দিনা, বুড়িচং উপজেলার নিমসার, সদর উপজেলার সৈয়দপুর রাস্তার মাথায় যাত্রীছাউনির পাশে গড়ে উঠেছে অবৈধ দোকান। সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার, সুয়াগাজী, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিয়াবাজার ও চৌদ্দগ্রাম বাজারে মহাসড়কের পাশেও স্থায়ী-অস্থায়ী স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে নিমসার বাজারে সম্প্রতি স্থাপনা ভেঙে দিলেও তা পুনরায় গড়ে উঠছে। সরেজমিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকায় দেখা গেছে, মহাসড়কের ওপরেই ফল, সবজি দোকান, চা স্টলসহ বিভিন্ন স্থায়ী-অস্থায়ী স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া সারি সারি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দাঁড়িয়ে রয়েছে। এ এলাকায় মহাসড়কের ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী দুটি লেনই স্থাপনা ও অবৈধ তিন চাকার যানবাহনের দখলে। যার কারণে মহাসড়কের এ অংশে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে, ঘটে দুর্ঘটনাও। এ ছাড়া জরুরি যান চলাচলে সৃষ্টি হয় প্রতিবন্ধকতা। এদিকে পদুয়ার বাজারে চট্টগ্রামগামী লেনের পাশে ফুটওভার ব্রিজের কাছে রয়েছে অস্থায়ী দোকান। এতে এলাকাটিতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। চৌদ্দগ্রাম বাজারের ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন বলেন, মহাসড়ক ও ফুটপাতে দোকান বসায় তা সংকুচিত হয়ে গেছে। এতে পরিবহন চালক, যাত্রী, পথচারী, বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। চৌদ্দগামের মিয়াবাজার এলাকায়ও একই অবস্থা। সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজি এলাকায় দেখা গেছে, মহাসড়কের ওপর ফুটপাত দখল করে বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসা হয়েছে। মহাসড়কে রয়েছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড। এখান থেকে যাত্রী তুলে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন গন্তব্যে। এখানে মহাসড়ক সংকুচিত হচ্ছে।
শাহ আলম, জামাল হোসনসহ কয়েকজন বাসচালক জানান, দেশের এক নম্বর এ মহাসড়কে ২-৩ কিলোমিটার পরপর বাজার। অনেক দোকানি বাজারের ওপরে পণ্য নিয়ে বসেন। গাড়ি চালাতে হয় থামিয়ে থামিয়ে। এতে যানজট সৃষ্টি হয়। ঘটে দুর্ঘটনা। মহাসড়ক থেকে স্থাপনা সরানো জরুরি। গৌরিপুর বাজারের ব্যবসায়ী আবদুল মজিদ বলেন, অস্থায়ী স্থাপনা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ অবৈধ তিন চাকার যানবাহনের দখলে মহাসড়কের গৌরিপুর এলাকা। এতে মহাসড়কে চলাচলরত দূরপাল্লার যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসসহ জরুরি সেবার যানবাহনগুলোকে যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে। এতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক খাইরুল আলম বলেন, ‘সড়ক ও জনপথ এবং জেলা প্রশাসন মিলে অভিযান পরিচালনা করে থাকি। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’