প্রেম মানে না কোনো ভাষা-সংস্কৃতির ভেদাভেদ। মিসরে থাকার সুবাদে পরিচয় হয় দিনাজপুরের বীরগঞ্জ এলাকার সমশের আলীর সঙ্গে মিসরীয় নুরহানের। পরিচয়ের সূত্রে গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। পরে এ বন্ধুত্ব থেকেই প্রেমের সম্পর্ক হয়। টানা দুই মাসের বোঝাপড়ার একপর্যায়ে ইসলাম ধর্মীয় মোতাবেক পারিবারিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। দুজনের কৃষ্টি-কালচার ভিন্ন হলেও এখনো তাদের মধ্যে কোনো সমস্যা হয়নি। এখন নুরহান-সমশেরের সংসারে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে। বড় মেয়ে রুকাইয়া (৬), আর ছেলে ইয়াসিন (৪)। তারা স্বামী-স্ত্রী ছেলেমেয়ে নিয়ে বাংলাদেশে এসে সমশেরের গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জের শতগ্রাম ইউপির অর্জুনাহার গ্রামে আড়াই মাস থাকার পর মিসরে ফিরে যান। যেহেতু সমশের আলী মিসরের কায়রো শহরে গার্মেন্ট ব্যবসা করেন। দুই সন্তানকে নিয়ে সামনের দিনের স্বপ্ন বুনছেন তারা। এখন তারা খুব ভালো আছেন এবং দেশে আবারও আসবে বলে জানালেন সমশেরের বাবা বাদশা মিয়া। নাতি-নাতনিসহ মিসরীয় বউমাকে পেয়ে সমশেরের বাবা-মা খুশি। বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউপির অর্জুনাহার গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে সমশের আলী।
২০০৮ সালে কাজের জন্য যান মিসরে। সমশের আলী কাজের সুবাদে মিসরে থাকার পর দেশে ফিরে আসার ভাবনা থাকলেও হঠাৎ পরিচয় হয় সে দেশের তরুণী নুরহানের সঙ্গে। একপর্যায়ে নুরহানের বাবাকে প্রস্তাব দিলে তিনি রাজি হন। সম্পর্কের দুই মাসের মাথায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ভিনদেশি এই তরুণ-তরুণী। বিয়ের চার বছর পর ২০২২ সালে মিসর থেকে স্বামীর বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জে আসেন নুরহান। নুরহান পুরোদস্তুর বাঙালি গৃহবধূ হয়ে আড়াই মাস থেকে আবার স্বামীর সঙ্গে মিসরে পাড়ি জমান। যেহেতু মিসরে স্বামীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
নুরহান সমশেরের সংসারে এখন মেয়ে রুকাইয়া আর ছেলে ইয়াসিনকে নিয়ে ভালোই আছেন।
সমশের আলীর বাবা অর্জুনাহার গ্রামের কৃষক বাদশা মিয়া বলেন, ‘আমার ছয় ছেলেমেয়ে। এর মধ্যে মেঝ ছেলে সমশের আলী ২০০৮ সালে কাজের খোঁজে মিসরে যায়। দীর্ঘদিন কাজের পরে নিজেই মিসরের কায়রো শহরে গার্মেন্ট ব্যবসা শুরু করে। ওখানে মিসরীয় মেয়ে নুরহানের সঙ্গে ২০১৮ সালে পরিচয় হয় আমার ছেলের। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। এরপর পারিবারিকভাবে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের চার বছর পর ২০২২ সালে ১০ জুলাই নুরহানকে নিয়ে আমার ছেলে আমার এই বাড়িতে আসে। মিসরীয় বউমাকে পেয়ে খুশি আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব সবাই। এখানে আড়াই মাস সংসার করে তারা ফিরে যায়।
তাদের সঙ্গে কথা হয়। তারা ভালো আছে। ব্যবসার জন্য যায়। আসা-যাওয়ার খরচও বেশি। তবে সামনে আবার আসবে বলে জানিয়েছে তারা।’