উপকূলে জলবায়ুজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার উদ্বাস্তুদের জন্য ঢাকা শহর বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। এ সমস্যা নগর জীবনের জটিলতা বাড়াচ্ছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীর চেয়ে এখন দেশে অভ্যন্তরীণ শরণার্থী বেশি। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসন ও নগর জীবনের বাস্তবতা : নীতিমালা বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পন্থা’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কারিতাস বাংলাদেশ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কারিতাস বাংলাদেশের প্রোগ্রাম পরিচালক দাউদ জীবন দাশ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সোহরাব হোসেন, ডিআরউর সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হাসান সোহেল। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডিআরইউর সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক নিখিল ভদ্র। সঞ্চালনা করেন কারিতাসের কারিগরি উপদেষ্টা ড. জামিল আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির দুর্যোগ বিভাগের প্রধান এলিস ত্রিপুরা।
সোহরাব হোসেন বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর ২০ থেকে ২৫ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়, অস্বাভাবিক জোয়ারের প্লাবন, নদীভাঙন ও লবণাক্ততার কারণে অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের হার বাড়ছে। এসব মানুষ আসতে বাধ্য না হলে ঢাকা শহরের এ অবস্থা হতো না।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিডরে যারা উদ্বাস্তু হয়েছিলেন তারা আর ফিরে যেতে পারেননি। সরকার থেকে যদি এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না নেওয়া হয়, তাহলে সামনে ভয়াবহ পরিস্থিতি দাঁড়াবে।
মাঈনুল হাসান সোহেল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের শহরগুলোতে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য করছে। শহরে এসেও অভিবাসীরা বাসস্থান সংকট, কাজের অভাব, সামাজিক বৈষম্যসহ নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন। এটা নিয়ে সরকারের আলাদাভাবে চিন্তা করা উচিত। এখন এটা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।
রফিকুল ইসলাম আজাদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসন সমস্যা সমাধানে সরকারের বিভিন্ন নীতিমালা রয়েছে, কিন্তু সেগুলোর বাস্তবায়ন এখনো দুর্বল। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমন্বিত পরিকল্পনা, যথাযথ পদক্ষেপ এবং অভিবাসীদের জন্য টেকসই সহায়তা প্রয়োজন।