ব্যাংকিং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চটপটির দোকানের নামে ৮০ কোটি টাকার ঋণ আত্মসাতের অভিযোগে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান ও এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব জানান দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। মামলাটি করেন দুদকের উপপরিচালক আফরোজা হক খান। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী, এভিপি ও মহিলা শাখার সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক সৈয়দা নাজমা মালেকা এবং হুমায়রা সাঈদা খানম, ব্যবসায়ী আকিজ উদ্দীন, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট মেসার্স লা এরিস্টোক্রেসির মালিক নাজমে নওরোজ প্রমুখ। দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ব্যাংকের প্রাপ্যতা না থাকা সত্ত্বেও এবং ঋণসীমা অতিক্রম করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মেসার্স লা এরিস্টোক্রেসি নামের প্রতিষ্ঠানের নামে ১৫২টি ঋণ ডিল দেখিয়ে ৭৯ কোটি ৯৬ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮৪ টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে এসব টাকা নগদ, পে-অর্ডার বা অন্য হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে গোপনে পাচার করা হয়।
গণমাধ্যমে ‘চটপটির দোকানে ২৩৪ কোটি টাকা ঋণ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর দুদক বিষয়টি অনুসন্ধান শুরু করে। প্রথমে নিয়ম মেনে কয়েক কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই সীমা অতিক্রম করে কয়েক বছরে দাঁড়ায় প্রায় ৮০ কোটি টাকা। চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি মহিলা শাখা থেকে মেসার্স লা এরিস্টোক্রেসি নামে অনুমোদিত ঋণই হয়ে উঠেছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের বড় কেলেঙ্কারি। আর নাজমে নওরোজ ২০০৮ সালে লা এরিস্টোক্রেসি নামে একটি রেস্টুরেন্ট চালু করেন এবং ২০১১ সালে ব্যাংকের কাজীর দেউড়ি মহিলা শাখায় একটি হিসাব খোলেন। ওই বছরেই তার ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন ও সরঞ্জাম কেনার জন্য ২ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর হয়। এভাবে ধীরে ধীরে সীমা অতিক্রম করে একের পর এক নতুন ‘ডিল’ সৃষ্টি করা হয়েছে। বর্তমানে গ্রাহক নাজমে নওরোজের নামে তৈরি ১৫২টি ডিলের বিপরীতে ৭৯ কোটি ৯৬ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮৪ টাকা বকেয়া রয়েছে।