কসোভোকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়োগে সহায়তা এবং স্কলারশিপ, ফেলোশিপ ও একাডেমিক অনুদান কর্মসূচির মাধ্যমে কসোভোর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির সংখ্যা বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল বাংলাদেশে নবনিযুক্ত কসোভোর রাষ্ট্রদূত লুলজিম প্লানা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রথম সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত প্লানাকে অভিনন্দন ও বাংলাদেশে আন্তরিক স্বাগত জানান। দুজনের বৈঠকে ‘জুলাই বিদ্রোহের’ চেতনা তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, কসোভোর জনগণের স্বাধীনতা, শান্তি ও সার্বভৌমত্বের প্রতি অটল প্রতিশ্রুতি সত্যিই প্রশংসনীয়। প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘আমরা যখন কসোভোতে পৌঁছাই, পুরো অঞ্চল তখন বিধ্বস্ত ছিল। পুরুষেরা তখনো ফেরেনি, কোনো মুদ্রা ছিল না, ব্যাংকব্যবস্থা ছিল না-সেখান থেকেই আমরা শুরু করি।’
রাষ্ট্রদূত প্লানা কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘কসোভোকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।’
তিনি গ্রামীণ কসোভোর অবদান স্মরণ করে বলেন, ‘আপনার (ড. ইউনূস) নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ট্রাস্ট আমাদের জাতিকে অনেক সহায়তা করেছে। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবদানও আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি।’
জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ কসোভো বর্তমানে দেশের শীর্ষস্থানীয় মাইক্রোক্রেডিট প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ২০টি মিউনিসিপ্যালিটি ও ২১৯টি গ্রামে এর কার্যক্রম চলছে। প্রতিষ্ঠানটি থেকে ঋণগ্রহীতার ৯৭ শতাংশই নারী।
বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তাঁরা। তৈরি পোশাক, ওষুধশিল্প, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, হালকা প্রকৌশল পণ্যের মতো সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে বিনিয়োগ ও পারস্পরিক সহযোগিতার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
রাষ্ট্রদূত প্লানা বলেন, উভয় দেশের ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে হবে। চেম্বার অব কমার্স ও শিল্প সংগঠনের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো দরকার।