চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) শিল্পখাতের নিরাপত্তা চর্চা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সহায়তায় এবং চুয়েটের পেট্রোলিয়াম ও মাইন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আয়োজনে কর্মশালায় প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়া, যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডিন ড. কাজী আফজালুর রহমান, পেট্রোলিয়াম ও মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম।
সেমিনারের দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সদস্য ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া। সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম, যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক মনজার খোরশেদ আলম।
এসময় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সদস্য ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া বলেন, কেমিক্যাল শিল্প একটি সুরক্ষিত খাত বলা যায়। তবে যদি জীবনে একবারও কেমিক্যাল শিল্পে বিস্ফোরণ হয়, তবে বিকট আকার ধারণ করে। এর প্রভাব থাকে বেশি। তাই শিল্পের পাশাপাশি শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে আইনিভাবে ব্যবসার চেয়ে বেআইনিভাবে ব্যবসা করা অনেক সহজ। আইন মেনে ব্যবসা করতে হলে ২২টি প্রতিষ্ঠান থেকে অনুমতি নিতে হয়। তারপরও কোনো দুর্ঘটনা হলে কেউ দায় নিতে চায় না। দেশের যেখানে ৮০ শতাংশ ব্যবসায় বেআইনি, সেখানে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন কিছু করতে পারবে না। আমাদের দেশে কেউ আইন মানতে চায় না। তাই কীভাবে আইন অনসুরণ করতে হবে, সে ব্যবস্থা করতে হবে।
কর্মশালার কো-স্পন্সর ছিল বসুন্ধরা কেমিক্যাল লিমিটেড। কর্মশালা শেষে বসুন্ধরা কেমিক্যালের হেড অফ প্রজেক্ট প্রকৌশলী মো. জাকারিয়া জালাল জানান, যে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হলো, তাতে স্পন্সর করতে পেরে আমরা আনন্দিত। দেশের কেমিক্যাল শিল্প এগিয়ে নিতে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ করেছি। এটার নিরাপত্তা ব্যাপারে আমরা বদ্ধ পরিকর। দেশের প্রকৌশলীদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা আরও বেশি পরিকল্পনা করছি। এতে করে দেশের সম্পদ দেশেই থাকবে। পাশাপাশি বিদেশি প্রকৌশলীর বদলে দেশের প্রকৌশলীদের যুক্ত করলে বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে বলেও মনে করেন তিনি।
কর্মশালায় মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, কর্ণফুলি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, ইস্টার্ন রিফাইনারী লিমিটেড, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনসহ ৩১টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ৫৭ জন প্রফেশনাল অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়া সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৮৪ জন শিক্ষার্থী, নবীন গ্র্যাজুয়েটসহ ১৪১ জন অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় কী-নোট স্পীকার ছিলেন বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইয়াসির আরাফাত খান। বক্তব্য রাখেন কাফকো’র নিরাপত্তা ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. জাহিদুল হক, সুপার পেট্রোকেমিক্যাল পিএলসির সিইও প্রণব কুমার সাহা, ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) এর ম্যানেজার (প্রসেস কন্ট্রোল) মো. সাজ্জাদ হোসাইন, এসকেএস বাংলাদেশ এর সিইও মশি উদ দুজা, র্মাস্ক এর হেলথ সেইফটি সিকিউরিটি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট এর হেড মোহাম্মদ জাহিদ আল করিম, আইওটিএ’র সিইও মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া।
সেমিনারের প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সদস্য ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া।
বিডি প্রতিদিন/কামাল