যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে একটি বড় মাপের চুক্তি হয়েছে। এ চুক্তি অনুযায়ী, সৌদিকে ন্যাটোর বাইরে ‘প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং সৌদি আরবকে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দেওয়াসহ উভয় পক্ষের মধ্যে একটি বেসামরিক পারমাণবিক চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানের মধ্যে বৈঠকে এসব চুক্তি ও সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে হোয়াউট হাউস জানিয়েছে। সূত্র : টিআরটি ওয়ার্ল্ড। খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রিন্স মুহাম্মদ সালমানের মধ্যে একটি বেসামরিক পারমাণবিক চুক্তি ও অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রির চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে হোয়াইট হাউস। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুই নেতার মাঝে অনুষ্ঠিত আলোচনার পর হোয়াইট হাউস এ ঘোষণা দেয়। খবরে বলা হয়, এ চুক্তিগুলো দুই দেশের মধ্যে কয়েক দশকের পুরোনো নীতি ও কৌশলগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুই দেশ বেসামরিক পারমাণবিক শক্তিসংক্রান্ত একটি যৌথ ঘোষণা অনুমোদন করেছে।
এ চুক্তিটি শক্তিশালী অপসারণ মানদণ্ডের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ও এটি কয়েক দশক ধরে বহু বিলিয়ন ডলারের পারমাণবিক শক্তি অংশীদারির আইনি ভিত্তি তৈরি করবে। এটি সৌদি আরবকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে মার্কিন প্রযুক্তি ও সহযোগিতা পাওয়ার পথ খুলে দেবে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি বড় প্রতিরক্ষা বিক্রয় প্যাকেজ অনুমোদন করেছেন, যার মধ্যে ভবিষ্যতে এফ-৩৫ উন্নত আমেরিকান যুদ্ধবিমানের সরবরাহ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সৌদি আরব মূলত ৪৮টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কিনতে আগ্রহী। প্রতিটি এফ-৩৫ ইউনিটের দাম প্রায় ৮০ মিলিয়ন ডলার থেকে ১১০ মিলিয়ন ডলার। এই বিক্রয় চুক্তির ফলে আমেরিকার দীর্ঘদিনের ‘গুণগত সামরিক অগ্রাধিকার’ নীতির বিরুদ্ধে একটি অবস্থান। ওই নীতিতে উল্লেখ আছে, ইসরায়েলের সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখার জন্য তার মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিবেশীদের তুলনায় সর্বদা উন্নত অস্ত্র থাকা উচিত। ট্রাম্প নীতিটিকে অগ্রাহ্য করে বলেছেন, ‘সৌদি আরবের কাছে ইসরায়েলের মতো একই ধরনের এফ-৩৫ থাকবে।’ পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবকে ন্যাটোর বাইরে ‘প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এ ঘোষণার সঙ্গে জড়িত রয়েছে দুই দেশের মধ্যে নতুন কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি দুই দেশের সামরিক ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করবে।
ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া : ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ও বিরোধী নেতারা এ পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন। কারণ তারা মনে করেন এটি মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু করাবে এবং ইসরায়েলের সামরিক শ্রেষ্ঠত্বকে ক্ষুণ্ন করবে।