‘দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক সংকট চলছে। এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান না হলে কিংবা কোনো মহলের অপকৌশল বা ষড়যন্ত্রের কারণে আগামী সংসদ নির্বাচন বানচাল হলে গোটা দেশকেই এর চরম মাশুল দিতে হবে। তখন দেশ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।’
শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকালে চট্টগ্রাম নগরের লালদিঘি ময়দানে বৃহত্তর সুন্নী জোট চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। জনসভায় জোটের পক্ষে ১৩ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়।
জনসভায় অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান পীরে তরিকত মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাওলানা সৈয়দ বাহাদুর শাহ মুজাদ্দেদি ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মতিন।
বিএসপি চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি এস এম শাহাবুদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং জনসভা প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর সভাপতি মাওলানা আবদুন্নবী আল কাদেরী, সদস্য সচিব বিএসপি চট্টগ্রাম জেলা সেক্রেটারি মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন ভূইয়া ও ইসলামিক ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর সহ-সভাপতি মঈন উদ্দিন চৌধুরী হালিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জনসভায় বক্তব্য রাখেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর, বাংলাদেশ ইসলামি ফ্রন্টের মহাসচিব মাওলানা স উ ম আবদুস সামাদ ও বিএসপির কো-চেয়ারম্যান এডভোকেট কাজী মহসিন চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এইচ এম মুজিবুল হক।
বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট প্রেসিডিয়াম সদস্য পীরে তরিকত আল্লামা সৈয়দ মছিহুদ্দৌলা, এডভোকেট আবু নাছের তালুকদার, মাওলানা আবু সুফিয়ান আবেদী আলকাদেরী, অধ্যক্ষ মাওলানা আহমদ হোসাইন আলকাদেরী, এম সোলায়মান ফরিদ, অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল, মাওলানা ছাদেকুর রহমান হাশেমী, মাওলানা গোলামুর রহমান আশরফ শাহ।
ইসলামিক ফ্রন্ট নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ মাওলানা এস এম ফরিদ উদ্দীন, আল্লামা কাজী জসিম উদ্দিন, মুহাম্মদ ইব্রাহীম আখতারী, বিএসপি অতিরিক্ত মহাসচিব মো. আসলাম হোসাইন, বিএসপি ভাইস চেয়ারম্যান পীরে তরিক্বত মাওলানা মুফতি খাজা বাকি বিল্লাহ আজহারী, যুগ্ম মহাসচিব মো. ইব্রাহিম মিয়া, যুগ্ম মহাসচিব ঢালি কামরুজ্জামান হারুন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ইসলামী ফ্রন্ট সভাপতি অধ্যাপক আবদুর রহিম মুনিরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি মাওলানা ফেরদৌসুল আলম খান কাদেরী, স ম হামেদ হোসাইন, অধ্যক্ষ ছৈয়দ মাওলানা জসিম উদ্দীন তৈয়বী, স ম শহিদুল হক ফারুকী, অধ্যাপক ছৈয়দ হাফেজ আহমদ, স ম শওকত আজিজ প্রমুখ।
জনসভায় পীরে তরিকত মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আজ ঘরে বাইরে কোথাও নিরাপদ নয়। গত ১৫ মাসে সারা দেশে মব সৃষ্টি করে নিরীহ মানুষকে পিটিয়ে হত্যা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হেনস্তা, মাজারে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটসহ বহু ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন স্থানে মসজিদে হামলা, জোর করে ইমাম খতিবদের মসজিদ থেকে বের করে দেওয়া, কবর থেকে লাশ উঠিয়ে জ্বালিয়ে ফেলা এবং কবরস্থানে অগ্নিসংযোগের মতো অমানবিক ঘটনাও ঘটেছে। এমনকি বিচারালয়ের বিচারকরাও আজ নিরাপদ নয়। মানুষ এসব থেকে মুক্তি চায়।’
মাওলানা এম এ মতিন বলেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের স্বপ্নের বাংলাদেশ এখনো অধরাই থেকে গেল। দেশে কিছুই বদলায়নি। বরং দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন খুন সন্ত্রাস আরও বেড়েছে। সরকারের কিছু উপদেষ্টার পক্ষপাতমূলক আচরণ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সরকার কারো এজেন্ডা বাস্তবায়নে অগ্রসর না হয়ে জনপ্রত্যাশার আলোকে সকল পদক্ষেপ নেবে- এটাই দেশবাসী দেখতে চায়।’
মাওলানা সৈয়দ বাহাদুর শাহ মুজাদ্দেদি বলেন, ‘দেশে কোটি তরুণ-যুবক আজ বেকার। দিন দিন বাড়ছে দারিদ্র্য। এই সোয়া এক বছরে সারাদেশে শত শত মিল কারখানা বন্ধ হয়ে লাখ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়লেও সরকারের এদিকে দৃষ্টি নেই। তাছাড়া, বর্তমান সময়ে কবরের লাশও নিরাপদ নয়। কবর থেকে লাশ তুলে উল্লাস করে পুড়িয়ে ফেলার ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত অতীতেও কখনো দেখা যায়নি।’
বিডি-প্রতিদিন/জামশেদ