বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এডভোকেট তালিকাভুক্তির পরীক্ষার আবেদন ফি কমানোর জন্য দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি অনুযায়ী, আবেদন ফি যৌক্তিকভাবে কমিয়ে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় নির্ধারণ করা উচিত।
আজ সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত স্মরণ চত্ত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এ দাবি উত্থাপন করেন। এ সময় আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ইসরাফিল রনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
এছাড়াও জুয়েল রানা, নুসরাত ত্বন্বী, জাহিদ হাসান, মারুফ হোসেনসহ চবির আইন বিভাগের ২৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা জানান, সম্প্রতি বার কাউন্সিলের ঘোষিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এডভোকেট তালিকাভুক্তির পরীক্ষার আবেদন ফি ৪,০২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ফি সাধারণ জনগণ এবং তরুণ আইন শিক্ষার্থীদের জন্য অযৌক্তিক এবং অসহনীয়। বিশেষত, যারা গ্রামাঞ্চল বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য, তাদের পক্ষে এ বিশাল পরিমাণ ফি বহন করা অসম্ভব।
শিক্ষার্থীরা আরও উল্লেখ করেন, দেশের অন্যান্য পাবলিক পরীক্ষাগুলোর আবেদন ফি আঞ্চলিক পর্যায়ে সম্পন্ন হওয়ার পরও সর্বোচ্চ ৩০০ টাকার মধ্যে নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে বিসিএস, ব্যাংক নিয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাগুলোর ফি রয়েছে। কিন্তু বার কাউন্সিল পরীক্ষার আবেদন ফি ৪,০২০ টাকা নির্ধারণ করায় এক ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে, যা তারা মেনে নিতে পারছেন না।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বৈষম্য ও অন্যায্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার সাগরসম রক্তের বিনিময়ে গড়ে উঠা নতুন বাংলাদেশে আবেদন ফি’তে এমন বৈষম্য আমাদের হতবাক করেছে। তবে, আমরা কোনো বিক্ষোভ বা সহিংস আন্দোলনের পক্ষে নই। আমরা সরকার এবং কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়টি অবগত করতে চাই এবং দেশের সংস্কার ও পুনর্গঠনে সহযোগিতা করতে চাই।’
তারা দাবি করেন, বর্তমান বিজ্ঞপ্তি (যা ৩১ মার্চ পর্যন্ত কার্যকর) অবিলম্বে বাতিল করা হোক এবং নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আবেদন ফি সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। সকল শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এটি একটি মানবিক ও যুক্তিসংগত ফি।
তারা আর‘ বলেন, ‘এই দাবি কোনো রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়। এটি বাংলাদেশের আইন শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষার আন্দোলন, যাতে সারাদেশের আইন শিক্ষার্থী এবং সচেতন নাগরিকদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’
শিক্ষার্থীরা জানান, ১৯ মার্চ বার কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ ফি নির্ধারণসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছে। এ প্রেক্ষিতে তারা আশা করছেন যে, কাউন্সিল তাদের দাবির বিষয়ে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেবে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, তাদের দাবি ব্যর্থ হলে সারাদেশের আইন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা সম্মিলিতভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে এবং একযোগে বর্তমান সার্কুলার প্রত্যাখ্যান করবে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ