নরসিংদীর শিবপুরে ফিলিপাইনের কালো জাতের আখ চাষ করে সফল হয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। মাত্র একটি চারা থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক আকারে চাষাবাদে নামেন শিবপুর উপজেলার পুটিয়া ইউনিয়নের মুনশেফের চর গ্রামের কৃষক মহসিন। তার এই সফলতা এখন এলাকার কৃষকদের নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।
জানা গেছে, অন্য জেলার তুলনায় নরসিংদীতে আখ চাষ তুলনামূলক কম হয়। তবে গত কয়েক বছর ধরে দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় কৃষকরা আখ চাষে ঝুঁকছেন। উঁচু জমি ও বেলে-দোয়াশ মাটি আখ চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় এ অঞ্চলে এর উৎপাদনও ভালো হচ্ছে।
কৃষকরা জানিয়েছেন, অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এবার আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো ফলনের পাশাপাশি বাজারে ভালো দামও পাচ্ছেন তারা। বর্তমানে বাজারে প্রতি পিস আখ ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শিবপুরের কৃষক মহসিন জানান, গত বছর তিনি দুই বিঘা জমিতে ১ লাখ টাকা খরচ করে প্রায় ৩ লাখ টাকার আখ বিক্রি করেন। এবারও তার ক্ষেতে বাম্পার ফলন হয়েছে এবং ভালো দাম পাওয়ার আশায় আছেন।
অন্যদিকে একই ইউনিয়নের সৈয়দনগর দড়িপাড়া গ্রামের তরুণ মারুফ হাসান মুরাদ তিন বছর আগে বাড়ির আঙিনায় শখের বশে একটি ফিলিপাইনের কালো জাতের আখের চারা রোপণ করেন। সুস্বাদু ও রসালো হওয়ায় তিনি বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি শুধু নিজেকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করেননি, বরং আশপাশের কৃষকদেরও চারা ও পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছেন।
স্থানীয় পাইকারি আখ বিক্রেতা ওমর ফারুক জানান, এই আখ সাইজে মোটা, লম্বা ও রসালো হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা বেশি। প্রতি পিস আখ পাইকারি ৬০ টাকায় কিনে খুচরা বাজারে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করে ভালো মুনাফা হচ্ছে।
নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ড. মুহাম্মদ আবদুল হাই বলেন, চলতি অর্থবছরে জেলায় ১৮২ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই চিবিয়ে খাওয়ার আখ। বিশেষ করে কালো জাতের আখ রোগবালাইমুক্ত হওয়ায় লাভজনক। তিনি আরও বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সবসময় কৃষকদের পাশে থেকে বীজ, কীটনাশক, সার এবং প্রযুক্তিগত পরামর্শ দিয়ে থাকে।
স্থানীয়রা জানান, মারুফ হাসানের ক্ষেতের আখ দেখতে প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসে। আখ ও আখের চারা বিক্রি করে তিনি এখন স্বাবলম্বী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এই আখ সারাদেশে ছড়িয়ে দিলে কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক