স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করে বন সংরক্ষণের জন্য ২০১৭ সালে রক্ষিত এলাকা ব্যবস্থাপনা বিধিমালা প্রণয়ন করে সরকার। তবে এই বিধিমালার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন আর্থিক ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুমোদন, যা এখনো পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সহ-ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম টেকসই করতে এই নীতিমালার দ্রুত অনুমোদন প্রয়োজন।
রবিবার বিকেলে সহ-ব্যবস্থাপনা দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আরণ্যক ফাউন্ডেশন আয়োজিত অনলাইন আলোচনা সভায় বক্তারা এই আহ্বান জানান।
২০০৮ সালের ২৩ মার্চ ভোরে শীলখালী সহ-ব্যবস্থাপনা সংগঠনের কমিউনিটি টহল দলের তরুণ সদস্য রফিকুল ইসলাম কক্সবাজারের টেকনাফ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে পাহারারত অবস্থায় বনদস্যুদের হাতে নিহত হন। রক্ষিত এলাকা সংরক্ষণে তার আত্মত্যাগের স্মরণে ২০০৯ সাল থেকে প্রতি বছর এই দিনটি ‘সহ-ব্যবস্থাপনা দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. ছানাউল্ল্যা পাটওয়ারী। তিনি বলেন, “নীতিমালাটি অনুমোদনের আগে পর্যালোচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। তবে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করে বন সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান খুবই আন্তরিক।”
এর আগে আরণ্যক ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেব বলেন, “সহ-ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়নের উপর নির্ভরশীল ছিল। তবে সম্প্রতি ইউএসএআইডির অর্থায়ন বন্ধ হওয়াতে কার্যক্রম এখন বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়েছে। তাই দ্রুত আর্থিক ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুমোদন করা দরকার।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আরণ্যক ফাউন্ডেশনের সিএমও নেটওয়ার্ক কর্মসূচির সমন্বয়কারী মোস্তফা কামাল, ইন্সটিটিউশন অব ফরেস্টারস অব বাংলাদেশ (আইএফবি)-এর ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেক্রেটারি মো. মদিনুল আহসান, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নেকম-এর উপ-প্রকল্প পরিচালক শফিকুর রহমান, বিভিন্ন সহ-ব্যবস্থাপনা নেটওয়ার্কের নেতৃবৃন্দ।
২০০৩-০৪ সাল থেকে বন অধিদপ্তর নিসর্গ কর্মসূচির আওতায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করে রক্ষিত এলাকা সহ-ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে দেশের ২২টি রক্ষিত এলাকায় ২৮টি সহ-ব্যবস্থাপনা সংগঠন বন অধিদপ্তরের সাথে কাজ করছে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক