এক যুগের বেশি বয়স রংপুর সিটি করপোরেশনের। আয়তন ২০৫ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় এক লাখ। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে কমপক্ষে ৪০-৫০ হাজার মানুষ প্রতিদিন নানা প্রয়োজনে রংপুর শহরে আসেন। এসব মানুষের পানি পানের কোনো ব্যবস্থা নেই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে। বাইরের লোকজনকে পানির পিপাসা মেটাতে হয় কোনো হোটেলে গিয়ে অথবা বোতলজাত পানি কিনে। আগে এ অবস্থা ছিল না। এক সময় বহিরাগত মানুষের পানি পানের জন্য মোড়ে মোড়ে টিউবওয়েল ও ট্যাপের পানির ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু সেসব এখন অতীত।
সিটি করপোরেশন ও নগরীর বিভিন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রংপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৮৯ সালে। এটি ক শ্রেণিতে উন্নীত হয় ১৯৮৬ সালে। বর্তমান সিটি করপোরেশনে ৩৩টি ওয়ার্ড রয়েছে। মহল্লা রয়েছে ৪৪২টি। সিটি করপোরেশন এলাকায় শিক্ষিতের হার ৬৫ শতাংশ। প্রবীণরা জানান, ২০০ বছরের বেশি বয়সি এ শহরে এক সময় বহিরাগত মানুষের জন্য রাস্তার মোড়ে মোড়ে পাকা কুয়া ছিল। কালের চক্রে সেসব হারিয়ে গেছে। কুয়ার পাশাপাশি এক সময় গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে টিউবওয়েল ছিল। এ ছাড়া একাধিক স্থানে ট্যাপের মাধ্যমে পানির ব্যবস্থা করা হতো। এসবের কিছুই নেই এখন। সবকিছু অতীত হয়ে গেছে। সিটি করপোরেশন এলাকায় বহিরাগত মানুষকে পানির জন্য হাহাকার করতে হয়। অনেকে হোটেল-রেস্তোরাঁয় গিয়ে পানি পান করেন। আবার কেউ বোতলজাত পানি পান করে পিপাসা মেটান, অথচ এ অবস্থা কয়েক দশক আগেও ছিল না। সিটি করপোরেশন বলছে প্রতিষ্ঠাকালীন বহিরাগত মানুষের পানি পান করানোর জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি।
রংপুর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান কাজী মোহাম্মদ জুননুন বলেন, আমি ১৯৯৮ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলাম। এ সময় নগরবাসী ও বহিরাগত মানুষের পানি পানের জন্য প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে টিউবওয়েল অথবা পানির ট্যাপ বসিয়েছিলাম। এখন এসব কিছুই নেই।
প্রবীণ সংবাদকর্মী মাহিগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি বাবলু নাগ বলেন, সুন্দরগঞ্জের মতো একটি পৌরসভায় মানুষজনকে পানি পান করাতে বেশ কয়েকটি টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। অথচ সিটি করপোরেশনের মতো এলাকায় বহিরাগত এবং ভাসমান মানুষকে পানি পান করানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। সত্যি এটা দুঃখজনক।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা বলেন, করপোরেশন হওয়ার প্রথম দিকে নগরবাসী ও বহিরাগত মানুষের পানি পানের জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। এখন এ ধরনের কোনো প্রকল্প নেই।