সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন ঢাকার আশুলিয়ায় পুলিশের পিকআপ ভ্যানে পুড়িয়ে হত্যা করা সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম। গতকাল বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জবানবন্দি দেওয়ার সময় তিনি আর্তনাদ করে বলেন, আমার ছেলের হাতে ছিল লাঠি আর জাতীয় পতাকা। তার পরও কেন আমার ছেলেকে হত্যা করা হলো। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। এদিন প্রসিকিউশনের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম সাক্ষী তাদের জবানবন্দি তুলে ধরেন আদালতে। প্রসিকিউশনের অষ্টম সাক্ষী খুলনা হাজী মোহাম্মদ মুহসীন কলেজের শিক্ষার্থী নাইম শিকদার গত বছর ৪ আগস্ট বিকালে খুলনার শীববাড়ী মোড়ে পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার ঘটনার বর্ণনা দেন। এ সময় তিনি নিজের পিঠে অসংখ্য গুলির চিহ্ন দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালকে বলেন, এখনো গুলিগুলো শরীরেই রয়েছে।
অন্যদিকে প্রসিকিউশনের ষষ্ঠ সাক্ষী ভ্যানচালক আবদুস সামাদ গত বছর ১৯ জুলাই উত্তরা বিএনএস সেন্টারের সামনে আন্দোলনে অংশগ্রহণের কথা জানিয়ে বলেন, ‘পুলিশ আমাদের ধাওয়া করে গুলি করে। সেই গুলি পিঠে লেগে আহত হই।’ আর প্রসিকিউশনের সপ্তম সাক্ষী মো. মিজান মিয়া সাক্ষ্য দেন আবদুস সামাদের শরীর থেকে বের করা গুলি তদন্ত কর্মকর্তার জব্দের বিষয়ে।
পরে এ মামলার পলাতক আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন সাক্ষীদের জেরা করেন। মামলার একমাত্র গ্রেপ্তার সাক্ষী ও রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন আসামির কাঠকড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
এদিনে প্রসিকিউশনের পক্ষে ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এম এইচ তামীম, বি এম সুলতান মাহমুদ, তারেক আবদুল্লাহ, আবদুস সাত্তার পালোয়ান প্রমুখ ছিলেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত নয়জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আরও তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আজকের দিন ধার্য রয়েছে।
গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর পরই আশুলিয়া থানার সামনে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে ছয়জন আন্দোনকারীকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এ স্থানেই নিহত হন সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন সজল নামের এক আন্দোলনকারী।
সজলের মা ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে জবানবন্দিতে বলেন, ‘আমি আশুলিয়ায় নারী ও শিশু হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করতাম। আমার ছেলে সাজ্জাদ হোসেন সজল ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় বাইপাইল এলাকায় আন্দোলনে যোগ দেয়। সেদিন হাসপাতালে অনবরত গুলিবিদ্ধ রোগী আসছিল। তখন আমি বারবার ছেলেকে ফোন করে বলি, বাবা তুমি বাসায় ফিরে আসো। হাসপাতালে অনেক গুলিবিদ্ধ আহত রোগী আসতেছে, তোমার আন্দোলনে থাকার দরকার নেই। তখন সে আমাকে বলে, তুমি এমন স্বার্থপর কেন আম্মু? আমি এখন বাসায় যেতে পারব না। আমার সামনে চার চারটা লাশ এবং আমি একজন আহতকে ধরে বসে আছি।’
জবানবন্দিতে শাহীনা বেগম বলেন, ‘সেদিন সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার দিকে আমাদের হাসপাতালে দুটি লাশ আসে। অনেক আহত রোগী আসে। আমি তখন আমার ছেলেকে আবার ফোন করে বাসায় চলে যেতে বলি। কিন্তু সে বাসায় ফিরে আসেনি। সে আমাকে বলে, মা আমি যদি মারা যাই, তাহলে হাজার সন্তান তোমার পাশে দাঁড়াবে। তুমি আমার চিন্তা করো না। তার পর আরও দুটি লাশ আমার হাসপাতালে আসে। আমি দৌড়ে রিকশার কাছে যাই এবং ভাবতে থাকি এই বুঝি আমার ছেলে হাসপাতালে এলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুপুর পৌনে ৩টার দিকে আমার হাসপাতালের ডাক্তার বলল, দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে, সজলকে আসতে বলো। ওই সময় আমি দুবার সজলকে ফোন দিয়েছিলাম। কিন্তু ফোন কেটে দিয়েছে। পরে অনবরত রিং করেছি কিন্তু কেউ রিসিভ করেনি। পরে ফোন বন্ধ হয়ে যায়। তখন আমি তার সব বন্ধু-বান্ধবকে ফোন দিয়ে বাইপাইল এলাকায় সজলের খোঁজ নিতে বলি। তারা বলে অনবরত গুলি হচ্ছে, আমরা খোঁজ নিতে পারছি না। আশুলিয়া থানার সামনে আমরা যেতে পারছি না। আমি নিজে খোঁজ নিতে যেতে পারিনি, কারণ হাসপাতালে প্রচুর গুলিবিদ্ধ আহত লোক আসছিল।’
সন্ধ্যায় ছেলের খোঁজে হাসপাতাল থেকে বের হন জানিয়ে জবানবন্দিতে শাহীনা বলেন, ‘আমি সজলের এক বন্ধুকে সফঙ্গ নিয়ে আশপাশে যত হাসপাতাল আছে সব হাসপাতালে খোঁজ করে পাইনি। আমার স্বামীও বিভিন্ন হাসপাতালে ছেলের সন্ধানে খোঁজখবর করে। খোঁজাখুঁজি করে সজলকে না পেয়ে রাত ৩টার দিকে আমি বাসায় ফেরার উদ্দেশে বাইপাইল মোড়ে আসি। তখন সেখানে লাঠিসোঁঠা হাতে পাহাড়ারত ছাত্রদের দেখতে পাই। তাদের কাছে আমার ছেলের সন্ধান জানতে চাই এবং আমার মোবাইলে থাকা ছবি তাদের দেখাই। তখন একজন ছেলে আমাকে বলে আশুলিয়া থানার সামনে ৬-৭টি ছেলেকে হত্যা করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। আপনি সেখানে আপনার ছেলেকে খুঁজে দেখতে পারেন। আমি তখন আশুলিয়া থানায় যেতে চাইলে অন্য ছাত্ররা আমাকে সেখানে যেতে দেয়নি। তারা আমাকে জোর করে বাসায় পাঠিয়ে দেয়।’
পোড়া জুতা দেখে ছেলের লাশ চিনতে পারেন জানিয়ে জবানবন্দিতে আর্তনাদ করে সজলের মা শাহীনা বলেন, ‘পরদিন ভোর সাড়ে ৬টার দিকে আমি আশুলিয়া থানার সামনে গিয়ে দেখি পুলিশের পিকআপ গাড়িতে বেশ কয়েকটি পোড়া লাশ। অনেক মানুষ লাশগুলোর ছবি ও ভিডিও করছিল। আমি ভিড় ঠেলে সামনে যাই এবং একটা ছবি তুলি। আমি দেখতে পাই একটি লাশ এমনভাবে পুড়ে গেছে যে, পায়ের একটি মোটা হাড় উঁচু হয়ে আছে এবং সে হাড়ের সঙ্গে একটি জুতা পোড়া অবস্থায় ঝুলছে। সামান্য স্পর্শ করলেই জুতাটা পড়ে যাবে। জুতাটা দেখেই আমি বুঝতে পারি যে, এই জুতাটি আমার ছেলে সজলের জুতা। আমি তখন উপস্থিত সেনা সদস্যদের বলি, এটাই আমার ছেলের লাশ। দয়া করে আমার ছেলের লাশ আমাকে দিয়ে দিন। তখন সেনাবাহিনীর সদস্যরা আমাকে বলেন, এখন লাশ দেওয়ার অনুমতি নেই। অনুমতি পাওয়া গেলে আপনাকে জানাব।
তিনি বলেন, ‘বিকাল আনুমানিক ৪টা ৩০ মিনিটের দিকে সজলের বন্ধুরা আমাকে ফোন দিয়ে যেখানে লাশ পোড়ানো হয়েছিল সেখানে আসতে বলে। আমি সেখানে ৫টার দিকে গিয়ে পৌঁছাই। তখন গাড়ি থেকে একটার পর একটা পোড়া লাশ নামানো হয় এবং শনাক্ত করার চেষ্টা করা হয়। সেনাবাহিনীর সদস্যরা আমাকে লাশের কাছে যেতে দেয়। সজলের লাশ যখন নামানো হয় তখন তার সঙ্গে তার কর্মস্থলের আইডি কার্ডের আংশিক পোড়া কার্ড এবং তার মানিব্যাগের ভিতরে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড দেখে আমি আমার ছেলে সজলের লাশ শনাক্ত করি।’
জবানবন্দির শেষে এ ঘটনার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লা আল মামুন, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ ও ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের দায়ী করে তাদের বিচার দাবি করেন নিহত সজলের মা শাহীনা বেগম।
৫ মিটার দূর থেকে গুলি করে পুলিশ : খুলনার হাজী মোহাম্মদ মহসীন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাইম শিকদার সাক্ষ্য দেন গত বছর ৪ আগস্ট বিকালে খুলনা নগর ভবন এলাকার ঘটনার। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ‘বিকাল ৩টার দিকে আমি আমার বন্ধু রাকিবসহ তিন শিক্ষার্থী খুলনা মহানগরীর শিববাড়ী মোড় এলাকায় আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। সেখানে প্রায় ১০ হাজারের বেশি ছাত্রজনতা জড়ো হয়েছে। ছাত্রজনতা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে একভাগ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে রওনা হয় এবং আরেক ভাগ নগর ভবন এলাকার দিকে রওনা হয়। আমাদের দল নগর ভবন এলাকায় পৌঁছানোর পর পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। সেখানে খুলনার পুলিশ কমিশনার উপস্থিত ছিল। একপর্যায়ে পুলিশ কমিশনার মোজাম্মেলের নির্দেশে পুলিশ আমাদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ শুরু করে।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ বিকাল আনুমানিক ৬টার দিকে আমাদের ওপর অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে। একজন পুলিশ ৫ মিটার দূর থেকে আমাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। আমার পিঠে প্রায় ৫০০ গুলি বিদ্ধ হয়। আমার শরীরে অন্যান্য স্থানেও গুলি লাগে। আমার শরীরে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে মেয়রের বাসার সামনে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আমি রাস্তায় পড়ে যাই। সহযোদ্ধারা আমাকে নিকটস্থ তিনটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। কোনো হাসপাতাল আমাকে ভর্তি করেনি। কারণ তারা বলেছে যে, ভর্তি করা যাবে না, শেখ হাসিনার নির্দেশ। পরবর্তীতে আমাকে অটোরিকশায় করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।’ বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সাবেক বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ) চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান জবানবন্দিতে। তাদের ওপর নির্বিচার গুলির জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের দায়ী করে তাদের বিচার চান এই সাক্ষী।
ধাওয়া করে গুলি করে পুলিশ : ২৪ বছর বয়সী ভ্যানচালক আবদুস সামাদ ১৯ জুলাই গুলিবিদ্ধ হন রাজধানীর উত্তরা এলাকায়। ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ‘সেদিন শুক্রবার ছিল। জুমার নামাজের পর আমি আমার বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে উত্তরা আজমপুর বিএনএস সেন্টারের সামনে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। পুলিশ আমাদের ওপর গুলি ছুড়তে থাকলে আমরা যার যার মতো পালাতে থাকি। পুলিশ আমাদের ধাওয়া করে গুলি করে। একটি গুলি আমার মাথার পেছনে এসে লাগে। আমি মাটিতে পড়ে গেলে আন্দোলনকারীরা আমাকে নিকটস্থ একটি ছোট হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে আমাকে উত্তরা আধুনিক মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখানে নেওয়ার পর রাত ৮টার দিকে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরে সেখান থেকে আমাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়।’
ঢাকা মেডিকেলে ভালো চিকিৎসা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, বুলেট বের না করেই ঢাকা মেডিকেল আমাকে রিলিজ দিয়ে দেয়। পরে আমি গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাটে চলে যাই। ৫ আগস্টের পর ঢাকায় আসি। আমার মা যে বাসায় কাজ করত সে বাসার গৃহকর্তার সাহায্যে আমি ঢাকা ইবনে সিনা হাসপাতাল, কল্যাণপুরে ভর্তি হই। সেখান থেকে আমাকে ইবনেসিনা (শংকর) ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমার অপারেশন হয়। অপারেশন করে আমার মাথার পেছন থেকে লম্বা একটি বুলেট বের করা হয়। বুলেটটি আমাকে দেওয়া হয়। দেড় মাস ভর্তি থাকার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি আসি। তিনি ঘটনার জন্য দায়ীদের বিচার চান ট্রাইব্যুনালের কাছে।
অক্টোবরের মধ্যে শেখ হাসিনার মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করার আশা প্রসিকিউশনের : জুলাই-আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে ঘটনার সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ (তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ বাদে) আগামী অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে শেষ হতে পারে।
গতকাল দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম এমন আশা প্রকাশ করেন।
এদিন রামপুরা, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ীর তিনটি পৃথক মামলায় ১৫ জন আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এ মামলাগুলোতে গতকাল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য ছিল। পরে প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রামপুরার মামলায় এক সপ্তাহ এবং বাকি দুই মামলায় দুই মাস করে সময় সময় মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আসামি। তাদের মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এরই মধ্যে অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি এ মামলায় রাজসাক্ষী হয়েছেন। মামলার অন্য দুই আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক।
কবে নাগাদ এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হতে পারে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘ম্যাটেরিয়াল উইটনেস (ঘটনার সাক্ষী) আগামী মাসের (সেপ্টেম্বর) মধ্যে এ মামলা শেষ করতে পারব। আইও (তদন্ত কর্মকর্তা) বাদে। অথবা পরের মাসে (অক্টোবর) প্রথম সপ্তাহে যেতেও পারে।’
আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং লেখক ও গবেষক বদরুদ্দীন উমর কবে সাক্ষ্য দেবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওনাদের সঙ্গে আলোচনা করব, ওনারা কবে আসতে পারবেন, সেভাবে আমরা করব।’