বিদেশে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলো থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি নামানোর মৌখিক আদেশ দেওয়া হয় শুক্রবার। তবে গেল কয়েক মাস ধরে জিরো পোর্ট্রেট নীতি বা কোনো ছবি না রাখার সিদ্ধান্ত অনুসরণ করা হয়েছে। সেই হিসেবেই এর গত ৫ আগস্টের পর থেকেই ধীরে ধীরে রাষ্ট্রপতির ছবি নিজেরা নীরবেই সরিয়ে নিয়েছে বিদেশে থাকা মিশনগুলো। রাষ্ট্রপতির ছবি সরানো নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে চাননি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কেউই। তবে বিদেশে দায়িত্ব পালন করা একাধিক কূটনীতিক জানিয়েছেন, আগস্টের পরিবর্তনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সরানো হয়েছিল। তখনই অনেক মিশন ‘ঝামেলা’ এড়ানোর জন্য আওয়ামী লীগ
সরকারের রাষ্ট্রপতির ছবি সরিয়ে ফেলে ‘জিরো পোর্ট্রেট নীতি’ গ্রহণ করে। এ ছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও যখন রাষ্ট্রপতির ছবি সরানো হয় তখন ইঙ্গিত বুঝতে পেরে অনেক মিশনই সরিয়ে নেয়। কিন্তু এরপরও কিছু মিশনে রাষ্ট্রীয় নীতি অনুসরণ করে রাষ্ট্রপতির ছবি ছিল। সেগুলোই এখন সরানো নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন সিনিয়র কূটনীতিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিবিসির বাংলার খবরে বলা হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাওয়ার পর কয়েকটি দেশের বাংলাদেশি দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। লন্ডন হাইকমিশন সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশনা পাওয়ার পর লন্ডন হাই কমিশনে শুধু হাইকমিশনারের অফিসে থাকা রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের ছবি শুক্রবার রাতেই সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ইউরোপ মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্তত পাঁচটি দূতাবাস কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের মৌখিক নির্দেশনা পেয়ে দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। শ্রীলঙ্কার কলম্বো দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বলেন, তাদের দূতাবাসে পাঁচই আগস্টের পরই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেলেন। আবার মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে মৌখিকভাবে নির্দেশনা এসেছে রাষ্ট্রপতির ছবি সরিয়ে ফেলার। কিন্তু আমাদের এখানে আগে থেকেই ছবি ছিল না। যে কারণে কলম্বো দূতাবাস থেকে নতুন করে ছবি সরাতে হয়নি। ইরানের বাংলাদেশি দূতাবাস সূত্র জানিয়েছে, পাঁচই আগস্টের পর তারা শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেলেছিলেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাসে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার দুটি ছবি বাঁধাই করে রাষ্ট্রদূতের অফিস কক্ষে টানানো হয়েছিল। গতকাল সেখান থেকে দুটি ছবিই সরিয়ে ফেলা হয়েছে।