ফোল্ডেবল স্মার্টফোন বর্তমানে প্রযুক্তিপ্রেমীদের কাছে একটি আধুনিক ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। একদিকে ফোন, অন্যদিকে ট্যাবলেটের সুবিধা—দুটি অভিজ্ঞতাই এক ডিভাইসে মিলছে। তবে দামি এই প্রযুক্তিপণ্য কেনার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন।
প্রথমেই ভাবতে হবে—আপনি ফোল্ডেবল ফোন কেন কিনতে চাচ্ছেন? এটি কি শুধুই শখের বসে, নাকি বাস্তব প্রয়োজনীয়তার জন্য?
যারা অফিসের কাজ, ট্রেডিং, ভিডিও এডিটিং বা প্রেজেন্টেশন তৈরি করেন, তাদের জন্য বড় স্ক্রিনসহ মাল্টিটাস্কিং সুবিধা থাকা ফোল্ডেবল ফোন হতে পারে কার্যকর একটি সমাধান। বড় পর্দায় একসঙ্গে একাধিক অ্যাপ চালানো অনেক সহজ হয়ে যায়।
অন্যদিকে যারা মূলত স্টাইল বা ফ্যাশনের দিকটি গুরুত্ব দেন, তাদের জন্য ফ্লিপ-স্টাইল ফোন হতে পারে আদর্শ। আকর্ষণীয় ডিজাইন, কমপ্যাক্ট আকৃতি এবং সহজে ভিডিও বা সেলফি তোলার সুবিধা এ ধরনের ফোনে থাকে। তবে এসব ফোন সবসময় কার্যকর নাও হতে পারে, বিশেষ করে দৈনন্দিন বা পেশাগত কাজের ক্ষেত্রে।
ফোল্ডেবল ফোনের স্ক্রিন ভেঙে গেলে এর মেরামতের খরচ সাধারণ স্মার্টফোনের তুলনায় অনেক বেশি। স্ক্রিন বদলাতে কখনো কখনো ফোনের এক-তৃতীয়াংশ থেকে অর্ধেক দামের সমপরিমাণ খরচ হতে পারে। কারণ, এর যন্ত্রাংশ সাধারণ নয় এবং শুধুমাত্র অফিসিয়াল সার্ভিস সেন্টারেই এগুলো মেরামত করা সম্ভব। তাই ফোন কেনার সময় থেকেই মেরামতের সম্ভাব্য খরচ হিসেব করে রাখা ভালো।
এখনো সব অ্যাপ ফোল্ডেবল স্ক্রিনের জন্য ভালোভাবে অপটিমাইজড নয়। অনেক সময় ভাঁজ খুলে বড় স্ক্রিনে ভিডিও দেখলে ওপর-নিচে কালো বর্ডার দেখা যায়, আর জুম করলেও ভিডিওর কিছু অংশ কেটে যেতে পারে। যদিও গুগল অ্যাপ ডেভেলপারদের এসব সমস্যার সমাধানে কাজ করতে উৎসাহ দিচ্ছে, তবুও এখনো অনেক অ্যাপ ঠিকভাবে কাজ করে না।
বুক-স্টাইল ফোল্ডেবল ফোনগুলো সাধারণত একটু মোটা ও ভারী হয়। ফলে যারা এক হাতে ফোন চালাতে পছন্দ করেন বা পকেটে রাখতে চান, তাদের জন্য এটি কিছুটা অসুবিধাজনক হতে পারে। আবার কেস ব্যবহার করলে ফোনের ওজন ও পুরুত্ব আরও বেড়ে যায়।
ব্যাটারিও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ফোল্ডেবল ডিজাইনের কারণে ভেতরের যন্ত্রাংশ বেশি জায়গা নেয়, ফলে বড় ব্যাটারি ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। এতে চার্জ দ্রুত শেষ হয়ে যায়। যদিও আশা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে সিলিকন-কার্বন ব্যাটারির মতো উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক