যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) চলতি মৌসুমের শুরুটা ভালোই ছিল ইন্টার মিয়ামির। কিন্তু কয়েক ম্যাচ পরই অবনতি হতে থাকে লিওনেল মেসির দলের। মনে হচ্ছে মিয়ামি যেন ধীরে ধীরে নিজেদের পথ হারাচ্ছে।
সোমবার ঘরের মাঠে সর্বশেষ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অরল্যান্ডো সিটির কাছে ৩-০ গোলের বড় পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো মিয়ামির। এতে শেষ ৭ ম্যাচের ৫টিতেই হেরে বসেছে মিয়ামি।
মেসির দলে থাকা অবস্থায়ও দলের এমন করুণ পরাজয় দেখে ভক্তরা হতাশ হয়ে বলতেই পারেন, পথ হারাচ্ছে কি মিয়ামি!
ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মিয়ামির ঘরের মাঠ চেজ স্টেডিয়ামে অরল্যান্ডোর হয়ে গোল করেন লুইস মুরিয়েল, মার্কো পাসালিচ এবং ডাগুর থরহালসন। গেল দুই বছরে রাজ্য প্রতিদ্বন্দ্বী মিয়ামির বিপক্ষে এটি অরল্যান্ডোর প্রথম জয়। এছাড়া মেসি স্কোয়াডে থাকা অবস্থায় মিয়ামির বিপক্ষে প্রথমবার জিতলো তারা।
এ নিয়ে টানা ১১ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড ধরে রেখেছে অরল্যান্ডো। ফ্লোরিডা প্রতিদ্বন্দ্বী মিয়ামির বিপক্ষে এই জয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে তারা। অন্যদিকে ফ্লোরিডা ডার্বিতে টানা চার ম্যাচের অপরাজেয় যাত্রা শেষ হয়েছে মিয়ামির।
সর্বশেষ তিন লিগ ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মতো ৩ গোলের ব্যবধানে হারলো মিয়ামি। এটি মৌসুমের প্রথম লিগ ম্যাচ, যেখানে তারা কোনো গোল করতে পারেনি।
ঘরের মাঠে খেলার শুরুটা ছিল দুই দলের সমানে-সমানে আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ দিয়ে। তবে প্রথম গোলটা আসে সফরকারী অরল্যান্ডো সিটির দারুণ গোছানো এক আক্রমণ থেকে। গোলকিপার পেদ্রো গায়েসে থেকে শুরু করে একের পর এক পাসের সমন্বয়ে বল পৌঁছে যায় লুইস মুরিয়েলের কাছে, যিনি ঠান্ডা মাথায় বল জড়ান মিয়ামির জালে।
হাফটাইমেই পিছিয়ে পড়ে ১-০ গোলে হেরনসরা। কিন্তু ম্যাচের সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা আসে দ্বিতীয়ার্ধে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই একটি কর্নার থেকে বিপজ্জনক কাউন্টার অ্যাটাক করে অরল্যান্ডো। মার্টিন ওজেদা একদম একা গোলমুখে পৌঁছে গেলেও শটটি বাইরে মেরে গোল মিস করেন। তবে এরপর আর অপেক্ষা করতে হয়নি।
মার্কো পাসালিচ দ্বিতীয় গোলটি করেন-তাও গোলরক্ষক অস্কার উস্তারির এক বিরল ভুল থেকে। বল তার পায়ের ফাঁক গলে জালে জড়ালে স্টেডিয়ামে নেমে আসে নীরবতা। মেসির দল তখন আর ফিরে আসার মতো মোমেন্টামই খুঁজে পাচ্ছিল না।
ম্যাচের অন্তিম লগ্নে একবার জ্বলে উঠেছিলেন লিওনেল মেসি। বামপাশ থেকে দুর্দান্ত এক বাঁ পায়ের শটে চেষ্টা করেছিলেন ব্যবধান কমাতে। কিন্তু ‘পুলপো’ গায়েসে নামে পরিচিত গোলরক্ষক পুরো শরীর দিয়ে সেই বল ঠেকিয়ে দেন। তাতে হেরে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা হয়ে দাঁড়ায়।
শেষদিকে রামিরো এনরিক একবার পোস্ট কাঁপিয়ে ফেরত আসা শটের পরও অরল্যান্ডো থেমে থাকেনি। শেষ মুহূর্তে ডাগুর থরহালসনের ডান পায়ের জোরালো শটে ম্যাচের তৃতীয় ও শেষ গোল হয়। মিয়ামির জন্য এ যেন সত্যিই এক দুঃস্বপ্নের রাত।
এই হারে ১৪ ম্যাচে মিয়ামির ৬ জয়, ২ ড্র আর ৬ হার। কিন্তু চিন্তার বিষয় হলো-শেষ ৭ ম্যাচে তারা হেরেছে ৫টিতে, আর এই সময়ে ২০টি গোল হজম করেছে। প্রতি ম্যাচে গড়ে প্রায় ৩টি গোল খাওয়ার এই পরিসংখ্যান বলছে, রক্ষণভাগে বড়সড় পরিবর্তন ছাড়া ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত