লিটন দাস, শেখ মেহেদির মতো ওপেনার রয়েছেন। অধিনায়ক লিটন একসময় নিয়মিত ওপেন করতেন। মেহেদি দলের পরিকল্পনায় ওপেন করেন। দুজনই খেলবেন টি-২০ এশিয়া কাপ। তবে ওপেনার নন। টি-২০ অধিনায়ক লিটন হয়তো তিন কিংবা চার নম্বরে ব্যাটিং করবেন। মেহেদি খেলবেন লেট মিডল অর্ডারে। এশিয়া কাপে টাইগারদের এখনকার নিয়মিত ওপেনার তানজিদ তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন। এশিয়া কাপে সাফল্য পেতে দুই ওপেনারকে একসঙ্গে জ্বলে উঠতে হবে। তাহলেই স্কোর বোর্ডে জমা হবে বড় ইনিংস। দুই তরুণের ওপর ভীষণ আস্থা সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজনের, ‘ইমন ও তানজিদ দারুণ আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাটিং করেন। টি-২০ ক্রিকেটের জন্য যা একেবারে আদর্শ ব্যাটিং। এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে সাফল্য পেতে হলে দুই ওপেনারের ব্যাট একসঙ্গে জ্বলে উঠতে হবে। দুজন যদি একসঙ্গে জ্বলে ওঠে, তাহলে প্রতিপক্ষ বোলারদের নাভিশ্বাস উঠবে। আমাদের দুর্ভাগ্য, দুজন একসঙ্গে জ্বলে উঠতে পারছে না।’
তানজিদ ও পারভেজ দুজনই তরুণ ব্যাটার। দুজনই বাঁ হাতে ব্যাটিং করেন। দুজনই স্কয়ার অব দ্য উইকেটে দারুণ ছন্দময়। প্রতিটি ম্যাচেই রান করছেন। কিন্তু একসঙ্গে নয়। কোনো ম্যাচে পারভেজ রান করছেন তো আরেক ম্যাচে ব্যর্থ। একই কথা প্রযোজ্য, তানজিদের ক্ষেত্রেও। এক ম্যাচে রান করছেন তো, আরেক ম্যাচে ফ্লপ। যদিও চলতি বছর চার সিরিজের দুটি জিতেছে বাংলাদেশ। অবশ্য সংখ্যার বিচারে জয়ের চেয়ে হারই বেশি। চার সিরিজে তিনটি করে মোট ১২ টি-২০ ম্যাচ খেলেছে লিটন বাহিনী। সিরিজ জিতেছে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। হেরেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পাকিস্তানের কাছে। আমিরাতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ জিতেও পরের দুটি হেরে সিরিজ হেরেছে ২-১ ব্যবধানে। পাকিস্তানের মাটিতে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। টানা পাঁচ হারের ধাক্কা নিয়ে শ্রীলঙ্কার মাটিতে সিরিজ খেলতে নামেন লিটনরা। প্রথম ম্যাচ হেরেও যায়। টানা ছয় ম্যাচ হারের পর ঘুরে দাঁড়ায় লিটন বাহিনী। পরপর দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করেন লিটনরা। ২-১ ব্যবধানে জিতে ঘরের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নামে। প্রথম দুটি ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করে নেয়। হেরে যায় তৃতীয় ম্যাচ। পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ওপেনারকে খেলান টিম ম্যানেজমেন্ট। তানজিদ ও পারভেজ ইমনের সঙ্গে খেলেন নাঈম শেখ। এক ম্যাচে রান করলেও পরে ছন্দ হারিয়ে ফেলেন নাঈম। ফলে নেদারল্যান্ডস সিরিজ ও এশিয়া কাপে সুযোগ মেলেনি তার। এশিয়া কাপের ওপেনে এবার লিটন বাহিনীর ভরসা পারভেজ-তানজিদ জুটি।
তানজিদের বয়স ২৪ বছর। ২০২৪ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে খেলেছিলেন ৬৭ রানের হার না মানা ইনিংস। এরপর ২৯ টি-২০ ম্যাচে রান করেছেন তিন হাফ সেঞ্চুরিতে ৬৫৫। স্ট্রাইক রেট ১২৮.৯৩। চার মেরেছেন ৬৪টি ও ছক্কা ৩২টি। টাইগারদের ভরসা হলেও সর্বশেষ ১০ ম্যাচে ধারাবাহিক ছিলেন না। সর্বশেষ ১০ ম্যাচে তানজিদের স্কোরগুলো যথাক্রমে ০, ১, ৭৩*, ৫, ১৬, ৪২, ৩৩, ৩১, ৪০ ও ৫৯। পারভেজের বয়স ২৩। ২০২২ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক। ১৩৮.৬৬ স্ট্রাইক রেটে ১৭ ম্যাচে রান করেছেন ৩৭৩। সেঞ্চুরি একটি এবং হাফ সেঞ্চুরি দুটি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ১০০ রানের ইনিংস খেলেন মাত্র ৫৪ বলে। ৫৩ বলের সেঞ্চুরিটি টি-২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে দ্রুততম। ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত চার মেরেছেন ৩০টি এবং ছক্কা ২৫টি।
এশিয়া কাপে বাংলাদেশের খেলা ১১ সেপ্টেম্বর হংকং, ১৩ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা ও ১৬ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে। ঘরের মাটিতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচ তিনটি ৩০ আগস্ট, ১ ও ৩ সেপ্টেম্বর। এশিয়া কাপের পর অবশ্য আমিরাতের মাটিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিনটি করে টি-২০ ও ওয়ানডে খেলবেন টাইগাররা।