অভিজ্ঞ সংগঠক কাজী রাজিব আহমেদ চপলের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে আর্চারি খেলার আবির্ভাব। শুরুতে অনেকেই তিরস্কার করে বলেছিলেন, তীর ছোড়া আবার খেলা নাকি। অযথা ফেডারেশন গড়ে অর্থ খরচ ছাড়া আর কিছু নয়। অথচ অচেনা আর্চারিই অল্পদিনে যে সাফল্য এনে দিয়েছে, তা অন্যদের জন্য স্বপ্নই বলা যায়। এসএ গেমসে ১০ সোনা জিতে রেকর্ড রয়েছে আর্চারদের। শুধু কি তাই? এশিয়ায় যে কোনো খেলায় প্রথম সোনাটি আসে আর্চারি থেকে। ইসলামি সলিডারিটি গেমসেও পদকের ছড়াছড়ি। রোমান সানা, হাকিম আহমেদ রুবেল, মিলন ও নারী বিভাগে দিয়া সিদ্দিকীরা সাফল্য পেয়ে তারকার খ্যাতি পেয়ে যান।
পদক জেতাটা যেখানে অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। সেখানে হঠাৎ করেই আর্চারি যেন থমকে গিয়েছিল। এর পেছনে ফেডারেশনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বও কাজ করছিল। তার পর আবার সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে চপলকে সরানোয় আর্চারিতে বিভেদটা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কেউ কেউ আতঙ্কেও ছিলেন এ খেলার ভবিষ্যৎ নিয়ে। যাক, শেষ পর্যন্ত সব ভয়কে জয় করলেন আবদুর রহমান আলিফ। অনেক দিন পর এ খেলায় জাতীয় সংগীত বেজে উঠল। আর তা আলিফের সাফল্যের বদৌলতে। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সোনা মিলল অর্ধ যুগ পর। শুক্রবার সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত লেগ-২ পুরুষ রিকার্বে। আলিফ সোনা জেতেন ফাইনালে জাপানের মিয়াতো পাকুতোকে হারিয়ে। ২০১৯ সালে একই বিভাগে রোমান সানা সোনা জিতে দেশকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যান।
আর্চারিতে এখন আলিফকে নিয়েই আলোচনা। আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রথমবার এত বড় সাফল্য পাওয়ার পর তার মুখে তৃপ্তির হাসি। এখানেই থেমে থাকতে চান না তিনি। লক্ষ্য বহুদূর যাওয়া। গত সেপ্টেম্বরে এশিয়ান যুবক আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইনালে উঠলেও সোনা জেতা হয়নি। এবার হাসলেন সাফল্যের হাসি। ১৯ বছর বয়স্ক এ আর্চারের টার্গেট এখন অলিম্পিক গেমস। ২০২৮ সালে লস-অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে সরাসরি খেলতে চান তিনি। জিততে চান স্বপ্নের পদক সোনা। অলিম্পিকে বাংলাদেশের কোনো পদক জেতার কৃতিত্ব নেই। আলিফের যদি স্বপ্ন পূরণ হয়, তা হবে ১৮ কোটি মানুষের স্বপ্ন পূরণ।