বাছাই পর্বে বাদ পড়ে যাওয়ায় এশিয়া কাপ হকিতে বাংলাদেশের খেলার কথা ছিল না। কিন্তু আসর ভারতে হচ্ছে বলে শক্তিশালী পাকিস্তান টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। পাকিস্তান সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শুধু হকি নয়, ভারতে আয়োজিত কোনো খেলাতেই তারা অংশ নেবে না। অন্যদিকে ভারতের মনোভাব একই। অবস্থা আরও জটিল হয়ে পড়ে সাম্প্রতিককালে দুই দেশের পাল্টাপাল্টি বিমান হামলার কারণে। বাছাই পর্বে বাদ পড়ায় দেশের হকি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এজন্য অনেকে অ্যাডহক কমিটিকে দায়ী করেন। কেননা জাতীয় দলের প্রাপ্তি ছিল নিয়মিতভাবে এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলা। ১৯৮৫ সালেই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এত বড় আসরে আয়োজন করে। যেখানে খেলাটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল সেখানে সুযোগ না পাওয়ায় জাতীয় দলের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক।
কপাল ভালো যে, ভারতে অনুষ্ঠেয় এশিয়া কাপ হকিতে বাংলাদেশ খেলার সুযোগ পেয়েছে। পাকিস্তান নাম প্রত্যাহার করায় অষ্টম দল হিসেবে চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়ান হকি ফেডারেশনের স্পষ্ট বক্তব্য ছিল পাকিস্তান না খেললে বাংলাদেশেরই খেলার সম্ভাবনা বেশি। অথচ হকি ফেডারেশনের নীরবতা দেখে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ খেলবে না। ভিতরে ভিতরে আবার এশিয়া কাপ খেলতে বাংলাদেশ প্রস্তুতিতেও নেমে পড়েছে, যা মিডিয়াকে জানানোর প্রয়োজনও মনে করেনি। ১২ আগস্ট থেকে জাতীয় দলের প্রস্তুতি শুরু হয়। মশিউর রহমান বিপ্লবকে কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
প্রশ্ন হচ্ছে এ নিয়ে হকি ফেডারেশনের গোপনীয়তা কেন? বিষয়টি গতকাল জানতে চাওয়া হয় হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক লে. কর্নেল (অব) রিয়াজুল হাসানের কাছে। তিনি বলেন, ‘গোপন রাখার প্রশ্নই ওঠে না। আসলে এশিয়ান হকি ফেডারেশন এখনো চূড়ান্ত জানায়নি এশিয়া কাপে বাংলাদেশ খেলতে পারবে কি না। আয়োজক ভারত থেকেও কোনো চিঠি আসেনি। ২২ নয় ২৬ জন নিয়ে আমরা প্রস্তুতি শুরু করেছি যেন ঝামেলায় পড়তে না হয়। অনুশীলন দেখে চূড়ান্ত দল গঠন করা তো সময় ব্যাপার। তাই আগাম প্রস্তুতিতে নেমে পড়া। কেননা হুট করে এত বড় আসরে আর নেমে পড়তে পারি না। আমি নিজে এশিয়ান হকি ফেডারেশনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা বলেছে আজ-কালকের মধ্যে চূড়ান্ত কিছু জানাবে। তবে আশা রাখি বাংলাদেশ এশিয়া কাপে খেলবে। আর যদি না বলে প্র্যাকটিস বন্ধ করে দেব। এখানে গোপনীয়তার কি আছে?’
যাক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কৌশলী জবাব দিলেও ফেডারেশনের অন্য কর্মকর্তারা বলছেন, এশিয়া কাপে খেলতে বাংলাদেশের বাধা নেই। এদিকে আবার বিপ্লবকে কেন এশিয়া কাপে কোচ করা হচ্ছে এ নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কেননা তিনি তো বিশ্বকাপ খেলা অপেক্ষায় অনূর্ধ্ব-২১ দলের দেখাশোনা করছেন। সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যেহেতু একটা ক্যাম্প চলছে। তাই বিপ্লব ও আশিকুজ্জামানকে জাতীয় দলের দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছি।’ এ ক্ষেত্রে পরীক্ষিত কোচ মামুন-উর-রশিদকে কি দায়িত্ব দেওয়া যেত না। সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এটা নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত।’ জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়ায় বাছাই পর্বে কোচ মামুন কিছু অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তাকে বাইরে রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য, চলতি মাসের ২৭ তারিখ থেকে বিহারের রাজগিরিতে আট দেশ নিয়ে এশিয়া কাপ হকির পর্দা উঠবে।