বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে প্রকাশ্যে কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি। যা করে দেখালেন ফেডারেশনের নির্বাহী সদস্য শাখায়াত হোসেন ভূঁইয়া শাহিন। তিনি শনিবার বাফুফের মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে জাতীয় দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরার পদত্যাগ চেয়েছেন। তাকে যে বিষয়ে কথা বলার জন্য মাইক দেওয়া হয়েছিল তা না বলে তিনি বলেন, আমার একটাই এজেন্ডা কাবরেরার অপসারণ চাই। এ চাওয়া দেশের ১৮ কোটি মানুষের। জাতীয় দলের কোচ ঘিরে এর আগেও অনেক বিতর্ক হয়েছে। মেয়াদ পূরণ হওয়ার আগে অনেককে বিদায়ও জানানো হয়েছে। কোচের পদত্যাগ চেয়ে এর আগে বাফুফের ক্লোজ ডোর নির্বাহী সভায় কেউ কেউ দাবি তুলেছিলেন। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির সামনে কোনো সদস্যই পদত্যাগ চাননি।
শাহিনের এমন বক্তব্যে ফুটবল তেলপাড়। প্রশ্ন হচ্ছে শাহিন যে দাবিটি ১৮ কোটি মানুষের বলে উল্লেখ করেছেন তা কি নিজের না পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী কারোর শেখানো। কেননা শোনা যাচ্ছে, বাফুফের নির্বাহী কমিটির কিছু সদস্য নাকি চাচ্ছেন না কাজী সালাউদ্দিনের আমলে নিয়োগ দেওয়া কাবরেরাকে। তবে তার দায়িত্ব পালন ও খেলোয়াড় চয়েস অনেকের পছন্দ হচ্ছে না। হামজাদের মতো বড় খেলোয়াড়রা জাতীয় দলে খেলছেন সেখানে কাবরেরাকে রাখাটা কতটা যুক্তিসংগত। শাহিন মূলত মিশুক ক্রীড়াঙ্গনে আন্তরিকতায় সবার সঙ্গে কথা বলেন, কিন্তু মিট দ্য প্রেসে কাবরেরাকে ঘিরে তিনি যে উত্তেজিত ছিলেন তা অস্বাভাবিক। ডায়াসে বক্তব্যের পর তিনি বিভিন্ন মিডিয়াকে বলেছেন, কাবরেরার যোগ্যতা তৃতীয় বা পাইওনিয়ার লিগে কোচ হওয়া।
শাহিন নিজে বলুক বা শেখানো হোক। তিনি কোচের পদত্যাগ চেয়ে বক্তব্য তো দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে নির্বাহী কমিটির এক সদস্যের এমন ক্ষোভভরা বক্তব্য গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। বাফুফের সাবেক এক সদস্য বলেন, ‘কোচ যতই অযোগ্য হোক না কেন ফেডারেশনের দায়িত্বে থাকা কেউ সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের দাবি তুলতে পারেন না। নির্বাহী কমিটির সভায় যে কেউ নিজ মতামত জানাতে পারেন। শাহিনের এমন বক্তব্য স্বাভাবিকভাবে সন্দেহ উঠেছে কয়েক মাস যেতে না যেতেই কমিটি কি বিভক্ত হয়ে পড়েছে। হয়তো একপক্ষ কাবরেরাকে মেয়াদ পর্যন্ত রাখতে চাচ্ছেন অন্যরা এখনই বিদায় চাচ্ছেন।’ শাহিনের এমন বক্তব্যের পর বাফুফে কি কাবরেরাকে বিদায় জানাবে। বিশেষ করে এশিয়া কাপ বাছাই শেষ না হওয়া পর্যন্ত সম্ভবই না। আবার শাহিনকে কোনো শোকস নোটিস দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেননা প্রকাশ্যে এমন কথা বলায় কমিটির ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে বলে কেউ কেউ মনে করেন।