চীনের চাঁদ অনুসন্ধান অভিযান চাং’ই–৬ থেকে আনা মাটির নমুনায় বিরল উল্কাপিণ্ডের অংশ শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই আবিষ্কার সৌরজগতের গঠন ও ভর স্থানান্তরের প্রক্রিয়া সম্পর্কে নতুন ধারণা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।
চীনের গুয়াংজু ইনস্টিটিউট অব জিওকেমিস্ট্রি চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেস–এর অধীন একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। তারা এই গবেষণাটি সম্পন্ন করেছে। গবেষণার ফলাফল আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক জার্নাল প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস–এ প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকেরা জানান, নমুনায় পাওয়া অংশগুলো সিআই শ্রেণির কন্ড্রাইট উল্কাপিণ্ডের মতো। এগুলো পৃথিবীতে অত্যন্ত বিরল—মোট সংগৃহীত উল্কাপিণ্ডের এক শতাংশেরও কম। চাঁদে কোনো বায়ুমণ্ডল বা ভূত্বকের গতিশীলতা নেই। তাই এটি প্রাচীন গ্রহাণু বা উল্কাপিণ্ডের সংঘর্ষের স্বাভাবিক সংরক্ষণাগার হিসেবে কাজ করে।
উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা চাঁদের মাটিতে থাকা খনিজ উপাদান ও অক্সিজেন আইসোটোপ বিশ্লেষণ করেছেন। তাতে দেখা গেছে, উল্কাপিণ্ডের এই অংশগুলো পানিসমৃদ্ধ ও জৈব পদার্থে ভরপুর। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, পৃথিবী ও চাঁদের যুগল ব্যবস্থা হয়তো পূর্বের ধারণার চেয়ে অনেক বেশি কার্বনযুক্ত উল্কাপিণ্ডের আঘাতে আক্রান্ত হয়েছিল।
গবেষক লিন মাং বলেন, এই আবিষ্কার প্রমাণ করে, সৌরজগতের বাইরের অঞ্চল থেকেও পদার্থ ভেতরের দিকে এসে পৌঁছাতে পারে। এটি চাঁদের পানির উৎস বোঝার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ সূত্র দেয়। তিনি আরও জানান, এই গবেষণা ভবিষ্যতে চাঁদের পানিসম্পদ কীভাবে গঠিত ও পরিবর্তিত হয়েছে, তা বোঝার নতুন পথ খুলে দেবে। গবেষকেরা এখন বহির্জাগতিক নমুনায় উল্কাপিণ্ড শনাক্ত করার জন্য একটি পদ্ধতিগত পদ্ধতি তৈরি করেছেন।
উল্লেখ্য, চাং’ই–৬ মিশন ২০২৪ সালে ইতিহাস সৃষ্টি করে। এটি চাঁদের দক্ষিণ মেরুর আইটকেন বেসিন থেকে ১,৯৩৫ দশমিক ৩ গ্রাম চাঁদের মাটি সংগ্রহ করে পৃথিবীতে নিয়ে আসে। এটি চাঁদের সবচেয়ে প্রাচীন, বৃহৎ ও গভীরতম বেসিন বলে মনে করা হয়।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল