টানা চার টি-২০ সিরিজ জিতে আত্মবিশ্বাসে ফুটছিল লিটন বাহিনী। আত্মবিশ্বাসী টাইগার অধিনায়ক লিটন চলমান সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে চ্যালেঞ্জ চেয়েছিলেন। ক্যারিবীয় অধিনায়ক শাই হোপ হয়তো অনুরোধ শুনেছিলেন স্বাগতিক অধিনায়কের। ৩ ম্যাচ টি-২০ সিরিজের প্রথমটি ১৬ রানে জিতে সেই অনুরোধ রেখেছেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন টাইগার অধিনায়ককে। চ্যালেঞ্জের মুখে এখন সিরিজ হারের শঙ্কায় লিটন, তাসকিন, মুস্তাফিজরা। অবশ্য সিরিজে ফেরার সহজ রাস্তা রয়েছে টাইগারদের। এজন্য আজ জিততেই হবে। চট্টগ্রামে বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের বিকল্প পথ নেই বাংলাদেশের। টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতা কাটিয়ে যদি জিতে যায় লিটন বাহিনী, তাহলে ৩১ অক্টোবরের ম্যাচটি অলিখিত ফাইনালে রূপ নেবে। হেরে গেলে টানা চার সিরিজ পর সিরিজ হারের তিক্ত স্বাদ নেবে টাইগাররা।
সিরিজে ফেরার ম্যাচে লিটন বাহিনীর একাদশে পরিবর্তন আসতে পারে। মিডল অর্ডারে শামীম হোসেন পাটোয়ারীর জায়গায় ফিরতে পারেন জাকের আলি অনীক। প্রথম ম্যাচ হারের পর মিডিয়ার মুখোমুখিতে অধিনায়ক লিটন ধুয়ে দিয়েছেন শামীমকে। যা আন্তজার্তিক ক্রিকেটে বেমানান। বাঁ-হাতি ব্যাটার শামীম অবশ্য ছন্দেও নেই। সর্বশেষ ৫ টি-২০ ম্যাচের তিনটিতেই শূন্য মেরেছেন। সোমবার প্রথম ম্যাচে আউট হয়েছেন বলের লাইন না বুঝে। জেসন হোল্ডারের গুডলেন্থ বলটিকে পুল খেলেন। কিন্তু লাইন মিস করলে বল সরাসরি উইকেটে আঘাত হানে। বোল্ড হন ব্যক্তিগত ১ রানে। আউট দেখে বিরক্ত প্রকাশ করেন কোচ ফিল সিমন্স, অধিনায়ক লিটন। ম্যাচ শেষে পুরস্কারবিতরণী মঞ্চে লিটন বলেন, ‘ধীরগতির উইকেটে প্রথম ১০ ওভারে খুব ব্যাটিং করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যদি আমরা শুরুতে উইকেট নিতাম, তাহলে তারা চাপে পরে যেত। শেষ ওভারে ম্যাচের চিত্র পাল্টে যায়। আমরা ম্যাচ থেকে ছিটকে পরি মূলত পাওয়ার প্লেতে অনেক (৪ উইকেটে ৪২ রান) হারিয়ে। আমি খুবই হতাশ শামীমের ব্যাটিং দেখে। ব্যাটিং নিয়ে শামীমকে ভাবতে হবে। শুধু আনন্দ করার জন্য খেলার কোনো মানে নেই। আপনাকে দায়িত্বশীল হতে হবে।’ অধিনায়কের মন্তব্যের আড়ালে গোটা দলের ব্যাটারদের দায়িত্বহীন ব্যাটিংয়ের প্রশ্ন উঠেছে আলোচনায়। ১৬৬ রানের টার্গেটে প্রথম ১২ ওভারে ৭৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ছিটকে পড়ে ম্যাচ থেকে লিটন বহিনী। এরপর অবশ্য দুই টেল এন্ডার তানজিম সাকিব ও নাসুম আহমেদ ২১ বলে ৪০ রানের জুটি গড়ে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু দুজনের বিদায়ের পর ২ বল আগেই হেরে যায়।
অনেক ক্রিকেটার ব্যক্তিগতভাবে অনুশীলন করেছেন গতকাল। সেখানে মিডিয়ার মুখোমুখিতে প্রথম ম্যাচ হারের আফসোস করেছেন তানজিম। জানিয়েছেন, যদি ম্যাচে টপ অর্ডারের কেউ রান করতেন, তাহলে ম্যাচ জিততে পারত। রাতে শিশিরে ব্যাটিং করা সহজ ছিল বলেন তানজিম, ‘যদি দেখেন, শেষের দিকে শিশিরের কারণে বল অনেক সহজে ব্যাটে আসছিল। আমার মনে হয়, যদি একজন থিতু ব্যাটসম্যান থাকত, তাহলে ম্যাচটা অনেক সহজ হয়ে যেত। শেষ দুই ওভারে ৩০ রান দরকার ছিল, একজন থিতু ব্যাটার থাকলে ম্যাচ হাতের মধ্যেই থাকত।’ তানজিম ২৭ বলে ৩৩ রান করেছিলেন ৩ চার ও ১ ছক্কায়। আবার তার ওভারেই টানা ৩ ছক্কায় ২২ রান নেন রভম্যান পাওয়েল। প্রথম ম্যাচে তিনি যে সময়ে আউট হন, তখন সমীকরণ ছিল ২৫ বলে ৪৯। সেজন্যই হতাশ হয়েছেন আরও, ‘আমি যদি ম্যাচ শেষ করতে পারতাম, খুব ভালো লাগত। বল ব্যাটে ভালোভাবে আসছিল, আমি সেট ছিলাম, নাসুম ভাইও ভালো সাপোর্ট দিচ্ছিলেন, বাউন্ডারি মারছিলেন। মনে হচ্ছিল, আমি এক ব্যাটসম্যানকে নিয়েই ব্যাট করছি। যদি আরও কিছুক্ষণ থাকতে পারতাম, হয়তো ম্যাচটা একদম শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারতাম। রিশাদও তখন আসত, ম্যাচটা হয়তো অন্যরকম হতো।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে বাংলাদেশ সর্বশেষ টি-২০ সিরিজ খেলেছিল ২০১৮ সালে। সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল ক্যারিবীয়রা। গত ডিসেম্বরে ক্যারিবীয়দের মাটিতে তাদের হোয়াইটওয়াশ করেছিল লিটন বাহিনী। দুই দলের লড়াইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় ১০টি এবং বাংলাদেশের জয় ৮টি।
দ্বিতীয় টি-২০
বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ
সময় : সন্ধ্যা ৬টা
সম্প্রচার : টি স্পোর্টস