অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তৈরি পোশাক শিল্পের সমস্যা তুলে ধরতে চার মাস ধরে সময় চেয়েও সাক্ষাৎ পাননি বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্স ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি এ কথা জানান।
মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘কারো সঙ্গে নেগোসিয়েশন করতে হলে তার সঙ্গে বসতে হয়। তিনি যদি সময় না দেন তাহলে কিভাবে নেগোসিয়েশন করব? আমরা বারবার সময় চেয়েও সময় পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চার মাস ধরে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চেয়েও পাইনি। অথচ স্টারলিংকের কম্পানি স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট এলে তার সঙ্গে উনি দেখা করেন। যে কম্পানি ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চায়। অথচ তিনি ৪০ বিলিয়ন ডলারের খাতের প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করেন না।’
বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, ‘পোশাকশিল্পসহ দেশের সমগ্র উৎপাদনমুখী শিল্প বর্তমানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ রকম একটি প্রেক্ষাপটে, সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধন অধ্যাদেশ-২০২৫’ নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশ, সেই সঙ্গে উৎপাদনমুখী শিল্প খাত এবং সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য জরুরি কিছু সাম্প্রতিক ইস্যু যেমন এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন, চট্টগ্রাম বন্দরের মাসুল বৃদ্ধি ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করতেই আমাদের আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন।’
শ্রম আইনের সংশোধন নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘ভারসাম্যহীন ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত টিসিসি ও ওয়ার্কিং কমিটিতে দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে ধাপে ধাপে শ্রমিকের সংখ্যা নির্ধারণে একটি ভারসাম্যপূর্ণ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল। যেখানে প্রথম ধাপে ৫০ থেকে ৫০০ শ্রমিকের কারখানায় ন্যূনতম ৫০ জন শ্রমিকের সম্মতিতে ইউনিয়ন গঠনের সুযোগ ছিল। কিন্তু পরে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় একতরফাভাবে সেটি পরিবর্তন করে ২০ থেকে ৩০০ শ্রমিক নির্ধারণ করা হয়েছে এবং ধাপ করা হয়েছে পাঁচটি।’
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত বাস্তবতাবিবর্জিত। কারণ মাত্র ২০ জন শ্রমিক দিয়ে একটি ইউনিয়ন গঠন করা হলে কারখানাগুলোতে এমন ব্যক্তিরা ট্রেড ইউনিয়ন করবেন, যারা ওই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন। এটি অন্তর্দ্বন্দ্ব ও শিল্পে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে ও উৎপাদন ব্যাহত করবে। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমবে এবং উদ্যোক্তারা নতুন প্রতিষ্ঠান স্থাপন বা পরিচালনায় নিরুৎসাহিত হবেন।’
বিডি প্রতিদিন/নাজিম