এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দক্ষিণ কোরিয়ায় তার সফর শুরু করার কয়েক ঘণ্টা আগে পশ্চিম উপকূলে একাধিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
বুধবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) এ তথ্য জানিয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্প তার এশিয়া সফরের শেষ পর্যায়ে বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ায় অবতরণ করেন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিউংয়ের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের পর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক-সক্ষম ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করার কয়েক ঘণ্টা পরে জাপান থেকে দক্ষিণ কোরিয়া পৌঁছান ট্রাম্প। সেখানে সিইওদের একটি শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দেবেন এবং ঐতিহাসিক শহর গিয়াংজুতে লির সঙ্গে দেখা করবেন।
এদিকে, কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) বুধবার বলেছে, মঙ্গলবার ইয়োলো সাগরে চালানো ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো দুই ঘণ্টারও বেশি সময় উড়ে সুনির্দিষ্টভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।
শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা পাক জং চন পরীক্ষাটি তত্ত্বাবধান করেছেন এবং বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
পাক জং চন বলেন, “বিভিন্ন কৌশলগত আক্রমণাত্মক অস্ত্রের নির্ভরযোগ্যতা যাচাই এবং শত্রুদের কাছে আমাদের সক্ষমতা প্রদর্শনই ছিল এই পরীক্ষার লক্ষ্য।”
তিনি আরও বলেন, “পারমাণবিক যুদ্ধ সক্ষমতা ক্রমাগত শক্তিশালী করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।”
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ এক বিবৃতিতে জানান, তাদের সেনাবাহিনী স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকাল তিনটার দিকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি শনাক্ত করে। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূল থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়।
দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী যৌথভাবে অস্ত্রগুলোর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করেছে এবং জানিয়েছে, তারা যেকোনও উত্তর কোরীয় উসকানির বিরুদ্ধে প্রভাবশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা বজায় রেখেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সময় ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ একেবারেই কাকতালীয় নয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথম কোরীয় উপদ্বীপ সফরের ঠিক আগে এ পরীক্ষা সঞ্চালন করা হয়। ট্রাম্প সফর চলাকালীন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে দেখা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে পিয়ংইয়ং এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ওই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের ইউনিভার্সিটি অব নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজের অধ্যাপক ইয়াং মুজিন বলেন, ট্রাম্পের সফরের আগমুহূর্তে এই উৎক্ষেপণ উত্তর কোরিয়ার বার্তা স্পষ্ট করেছে- তারা নিজেদের পারমাণবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদারে অটল এবং নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে আলোচনা করবে না। সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/একেএ