প্রায় ১৯ বছর পর আন্তর্জাতিক সমমানের ম্যাচ ফিরেছে বগুড়ায়। শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে মুখোমুখি বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল। ওয়ানডে ফরম্যাটের এই ম্যাচ দেখতে দর্শকদের ঢল নামে। ২০০৬ সালের পর এবরাই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ম্যাচ হওয়ায় শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামে যুবদের এই সিরিজকে কেন্দ্র করে ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝে আনন্দ বয়ে যাচ্ছে। সকাল থেকে ক্রিকেটভক্তরা মাঠে উপস্থিত হয়ে সারাদিন মাঠ মাতিয়ে রাখেন। ম্যাচে আফগানদের বিরুদ্ধে স্বাগতিক টাইগাররা আলো স্বল্পতায় কারণে ৫ রানে জয় পায়।
আজ মঙ্গলবার সকালে বগুড়া শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামে আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের দুই অধিনায়ক টস করতে নামেন। টসে জয়ী আফগান অধিনায়ক মাহবুব খান ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন। ৫০ ওভারের খেলায় প্রথমে ব্যাট করে আফগানরা ৯ উইকেট হারিয়ে ২৬৫ রান সংগহ করেন। আফগান ব্যাটারদের মাঝে উজারাইল্লাহ ১৩৭ বলে ১৪০ রান সগ্রহ করেন। আফগানদের পক্ষে আর কোন ব্যাটসম্যানরা বড় ভূমিকা রাখতে পারেননি। উজারাইল্লাহকে সঙ্গ দিয়ে খালিদ ৩৪, ফয়সাল ৩৩ ও ওসমান ১৫ রান করেন। অপর পক্ষে বাংলাদেশের পক্ষে বোলার ইকবাল হোসেন ইমন ৫৭ রানে ৫টি, রিজান ৫৪ রানে ২টি এবং সবুজ ও তামিম একটি করে ইউকেট নেন। জবাবে বাংলাদেশ দলের কালাম সিদ্দিকী এলিনের সেঞ্চুরীতে ভর করে শেষ পর্যন্ত ৪৬ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৩১ রান সংগ্রহ করার পর আলো স্বল্পতা দেখা দেওয়ায় ম্যাচ আম্পায়ার দুই দলের অধিনায়করে সঙ্গে কথা বলেন। আলোর অভাব দেখা দিলে ক্রিকেট খেলার আইনে (ডিএলএস মেথড) বাংলাদেশ দলকে ৫ রানে জয়ী ঘোষণা করা হয়। ম্যাচে স্বাগতিকদের পক্ষে কালাম সিদ্দিকী এলিন ১১৯ বলে ১০১, রিজান ৯৬ বলে ৭৫ এবং রিফাত ২৬ রান করেন। বাংলাদেশ দলের জয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন এলিন। ফলাফল হিসেবে এলিন ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরস্কারও পেয়ে যান। আর তাকে সঙ্গ দেন রিজান। বাংলাদেশ দলের ২ উইকেট পড়ার পর ইনিংসকে মেরামত করেন এই জুটি। এই জুটিই স্বাগতিকদের জয়ের ভীত গড়ে দেন। এর আগে টাইগার বোলার ইমন আফগানদের ব্যাটিং লাইন আপে ধ্বস নামান। আফগান বোলারদের মধ্যে ওয়াহিদুল্লাহ ৪৭ রানে ২টি, শাহীন ও নুরুস্তানি একটি করে উইকেট অর্জন করেন। টাইগার যুবাদের মধ্যে দলের হয়ে দায়িত্বপূর্ণ বোলিং করেন বোলার ইকবাল হোসেন ইমন।
সফরকারী আফগানিস্তান যুব ক্রিকেট দলের সাথে বাংলাদেশের যুবাদের ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের সূচনা হয় মঙ্গলবার সকালে। সকাল ৯টায় শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে মুখোমুখী হয় বিশ্ব ক্রিকেটের দুই শক্তিশালী যুবা দল। এই ম্যাচের আগে রবিবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে আফগানিস্তান যুব দলের অধিনায়ক মাহবুব খান এবং বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম সিরিজের ট্রফির মোড়ক উন্মোচন করেন। এসময় উভয় দলের কোচ ও ম্যানেজার উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ওয়ানডে সিরিজ খেলতে গত ২২ অক্টোবর বগুড়ায় আসে আফগান দল। আর বাংলাদেশ দল রাজশাহীতে অনুশীলন শেষে বগুড়ায় আসে। রবিবার সকালে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুশীলন করে।
বিসিবি সূত্র জানা যায়, এই সিরিজের কোন ম্যাচ দেখতে দর্শকদের টিকিটের প্রয়োজন হবে না। টিকিট ছাড়াই সবার জন্য গ্যালারি উন্মুক্ত থাকবে। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ ৩১ অক্টোবর শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। অবশিষ্ট ৩টি ম্যাচ হবে রাজশাহীতে।
বগুড়ার ক্রিকেট প্রেমিরা জানান, দীর্ঘদিন পর আবারও আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ পেয়েছে বগুড়ার এই ঐতিহাসিক ভেন্যু। বয়সভিত্তিক দলের হলেও দীর্ঘ সময় পর বগুড়ার কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে ছিল মানুষের উপচেপড়া ভিড়। খেলা দেখার জন্য স্টেডিয়ামের বেশিরভাগ গ্যালারি ছিল দর্শকের সরব উপস্থিতি।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল