১৯৬৮ সালে মার্কিন বিজ্ঞানী ড. জন বি. ক্যালহুন এক অদ্ভুত পরীক্ষা চালান। পরীক্ষাটির নাম দেন ‘ইউনিভার্স ২৫’। এতে দেখা হয়, যখন একটি সমাজে মানুষ বা প্রাণীর সংখ্যা খুব বেড়ে যায়, তখন কী হয়।
গবেষণায় ৮টি সুস্থ ইঁদুরকে রাখা হয় একটি ছোট ঘেরা জায়গায়। সেখানে ছিল প্রচুর খাবার, পানি, বাসা বানানোর উপকরণ ও আরামদায়ক পরিবেশ। প্রথমে সব ঠিকঠাক চলছিল। তিন মাসের পর প্রথম বাচ্চা জন্মায়, আর প্রায় প্রতি দুই মাসে সংখ্যা দ্বিগুণ হতে থাকে।
প্রায় দেড় বছর পর ইঁদুরের সংখ্যা পৌঁছে যায় ২,২০০-তে। জায়গা আরও থাকলেও ভিড় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে থাকে। অনেক পুরুষ ইঁদুর আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে, মারামারি শুরু হয়। স্ত্রী ইঁদুরেরা বাচ্চাদের দেখাশোনা বন্ধ করে দেয়, কেউ কেউ আক্রমণও করে। কিছু ইঁদুর একদম একা হয়ে যায়, কিছু শুধু খাওয়া-ঘুমানো আর নিজেদের পরিস্কার রাখায় ব্যস্ত থাকে—মিলন বা সামাজিক আচরণ বন্ধ হয়ে যায়।
এই অবস্থাকে বিজ্ঞানী ক্যালহুন বলেন ‘বিহেভিয়ারাল সিঙ্ক’—অতিরিক্ত ভিড়ে সমাজের স্বাভাবিক আচরণের ধ্বস।
প্রায় ৬০০ দিনের মধ্যে জন্ম সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ইঁদুরের সংখ্যা দ্রুত কমতে থাকে এবং সবশেষে সবাই মারা যায়। বিজ্ঞানীরা বলেন, এই ফল মানুষকেও সতর্ক করছে—অতিরিক্ত ভিড় ও সামাজিক ভাঙন একদিন মানুষের সভ্যতাকেও শেষ করে দিতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল