চাঁদে ভবিষ্যৎ মানববসতির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নতুন একটি সময় গণনা পদ্ধতি (টাইম স্কেল) তৈরি করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। চাঁদের সময় ও পৃথিবীর সময়ের পার্থক্য থাকায় এটি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষণা বলছে, চন্দ্রপৃষ্ঠে একটি দিন পৃথিবীর তুলনায় প্রায় ৫৬ মাইক্রোসেকেন্ড কম সময় নিয়ে সম্পন্ন হয়। সংখ্যাটি খুব ক্ষুদ্র হলেও দীর্ঘমেয়াদে এটি বড় ধরনের সময় বিভ্রান্তির কারণ হতে পারে। ফলে নভোচারীদের কার্যক্রম ও গবেষণা নির্ভুলভাবে পরিচালনার জন্য চাঁদকেন্দ্রিক একটি নির্ভরযোগ্য সময় গণনা পদ্ধতি জরুরি হয়ে উঠেছে।
নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের লুনার পজিশন, নেভিগেশন অ্যান্ড টাইমিং বিভাগের প্রধান চেরিল গ্রামলিং জানিয়েছেন, এটি কেবল একটি টাইম জোন তৈরি করার বিষয় নয়। বরং চাঁদের নিজস্ব সময় গণনা পদ্ধতি প্রতিষ্ঠাই হচ্ছে প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। কারণ, চাঁদে নভোচারীরা চলাফেরা, গবেষণা এবং যোগাযোগে যে সময় ব্যবহার করবেন, তা হতে হবে চাঁদের অবস্থানভিত্তিক।
হোয়াইট হাউসের এক সাম্প্রতিক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের মধ্যেই এই টাইম স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। ওই বছরই যুক্তরাষ্ট্র চাঁদে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে।
নাসাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহাকাশ সংস্থা এই সময় নির্ধারণে একসঙ্গে কাজ করছে। তবে এখনও কিছু বিষয়ে মতবিরোধ রয়েছে। বিশেষ করে, চাঁদের কোন স্থানে, কখন এবং কীভাবে সৌরঘড়ি বসানো হবে—সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই উদ্যোগ সফল হলে চাঁদের সময় ব্যবস্থাকে ঘিরে ভবিষ্যতের চন্দ্রাভিযান ও মহাকাশ গবেষণায় আরও সমন্বয় এবং নির্ভুলতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল