মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের পেছনে থাকা রহস্যময় শক্তি ডার্ক এনার্জি সম্ভবত দুর্বল হয়ে পড়ছে। যদি এই তথ্য নিশ্চিত হয়, তবে এটি আধুনিক মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাকে পরিবর্তন করতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
অ্যারিজোনার কিট পিক ন্যাশনাল অবজারভেটরির ডার্ক এনার্জি স্পেকট্রোস্কোপিক ইন্সট্রুমেন্ট (Desi) টিমের গবেষণায় উঠে এসেছে, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের হার এখনো বাড়ছে, তবে ডার্ক এনার্জির শক্তি শীর্ষে পৌঁছানোর পর ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে।
ডেসির গবেষণা অনুযায়ী, মহাবিশ্বের বর্তমান বয়সের ৭০ শতাংশ-এর সময় ডার্ক এনার্জির শক্তি সর্বোচ্চ ছিল, যা এখন প্রায় ১০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
কসমোলজিস্ট অধ্যাপক অ্যালেক্সি লথোড-হার্নেট বলেন, আমরা এমন এক আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে আছি, যা ডার্ক এনার্জি এবং মহাবিশ্বের প্রকৃতি সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উন্মোচন করতে পারে।
বিজ্ঞানীরা এতদিন ধরে মনে করতেন, ডার্ক এনার্জি যদি একটি ধ্রুবক শক্তি হয়, তবে মহাবিশ্ব ধীরে ধীরে ‘বিগ ফ্রিজ’ অবস্থায় পৌঁছাবে, যেখানে সবকিছু একে অপরের থেকে এত দূরে সরে যাবে যে আলোও পৌঁছাতে পারবে না। তবে নতুন গবেষণার তথ্য বলছে, যদি ডার্ক এনার্জি আরও কমতে থাকে এবং নেতিবাচক হয়ে যায়, তবে মহাবিশ্ব ‘বিগ ক্রাঞ্চ’-এর দিকে যেতে পারে, যেখানে সম্প্রসারণ থেমে গিয়ে মহাবিশ্ব সংকুচিত হতে শুরু করবে।
ডার্ক এনার্জি কমছে কিনা, তা চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করতে বিজ্ঞানীদের আরও গবেষণা প্রয়োজন।
অধ্যাপক জন পিকক বলেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও বেশি তথ্য প্রয়োজন। তবে অধ্যাপক কার্লোস ফ্রেঙ্ক আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, আমরা প্রচলিত ধারণার পরিবর্তন হতে দেখছি এবং নতুন একটি তত্ত্ব উঠে আসছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গবেষণা মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। অধ্যাপক ওফার লাহাভ বলেন, ডার্ক এনার্জি সম্পর্কে আমরা এতদিন যা জানতাম, সেটাই যথেষ্ট জটিল ছিল। এখন আমরা আরও নতুন প্রশ্নের মুখোমুখি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ডার্ক এনার্জির প্রকৃতি বুঝতে আরও গবেষণা প্রয়োজন, যা মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল