♦ বঙ্কিমচন্দ্রের বিখ্যাত উপন্যাস ‘কপালকুণ্ডলা’র উপসংহার হিসেবে সাহিত্যিক দামোদর মুখোপাধ্যায় ‘মৃন্ময়ী’ নামের একটি উপন্যাস রচনা করেন। সাধারণ মানের রচনাশৈলী ছিল উপন্যাসটি। বঙ্কিমচন্দ্র উপন্যাসটি পাঠ করেছিলেন। একদিন এক সাহিত্যসভায় দামোদরের সঙ্গে দেখা বঙ্কিমচন্দ্রের। ‘কেমন লাগল আমার লেখা উপন্যাসটি?’, দামোদরের এই প্রশ্নের উত্তরে হলভর্তি সাহিত্যরসিকদের মাঝে হাসতে হাসতে বঙ্কিমচন্দ্র বললেন, ‘মশাই, আপনি আমার কপালকুণ্ডলার উপসংহার লিখে দেখছি একেবারে আমাকেই সংহার করেছেন।’ দামোদর বঙ্কিমচন্দ্রের রসিকতার ইঙ্গিত বুঝতে পেরে একদম চুপ মেরে গেলেন। উল্লেখ্য, দামোদর মুখোপাধ্যায় ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্রের বেয়াইমশাই। অর্থাৎ সম্পর্কটা ছিল যথাযথই রসিকতার।
♦ শরৎচন্দ্র ভালো হিন্দি জানতেন না। তার হিন্দিজ্ঞান ছিল অতি সামান্য। একবার তিনি গেছেন পাটনা শহরে। একটি সাহিত্যসভার প্রধান অতিথি হিসেবে। ওই সভার হোতা এবং শ্রোতা সবাই হিন্দিভাষী। অতএব বক্তব্য রাখতে হলে শরৎচন্দ্রকে হিন্দিতেই বলতে হবে। এদিকে শরৎচন্দ্রের গলাও গেছে ভেঙে, ঠান্ডা লেগে। স্বভাবতই তিনি মুস্কিলে পড়লেন। তবু কিছু বলতেই হবে। শ্রোতারা অধীর আগ্রহে বসে আছেন। শেষমেষ তিনি স্থির করলেন, তার ঠান্ডা লেগে গলা ধরে যাওয়ার কথা তিনি হিন্দিতেই জানাবেন। নিজের মনে কথাগুলো হিন্দি অনুবাদ করে নিয়ে আমতা আমতা করে শরৎচন্দ্র বললেন, ‘হামারা গর্দান বৈঠ গিয়া ভাই!’ এই হিন্দি শুনে শ্রোতারা হেসে উঠলেন।