ব্রিটেনে আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন বাতিলের তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩ নম্বরে। প্রথম ও দ্বিতীয় নম্বরে রয়েছে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান।
হোম অফিসের সর্বশেষ তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে পাকিস্তান থেকে ব্রিটেনে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে অ্যাসাইলাম বাতিল হয়েছে ৬ হাজার ৩১৩ জনের। সেই তালিকায় বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে থাকলেও ঠিক কত আবেদন বাতিল হয়েছে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে বিএনপি বা জামায়াতের নেতা-কর্মী যারা ব্রিটেনে আশ্রয় আবেদন করেছিলেন, তাদের অনেকের আবেদন বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের কারণে বাতিল করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ৫ আগস্টের পর বিপুল সংখ্যক ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, মেয়র পালিয়ে লন্ডনে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। তাদের অনেকের আবেদনও স্থগিত, প্রক্রিয়াধীন, বাতিল হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে জুন ২০২৫ পর্যন্ত সর্বশেষ এক বছরে ১,১১,০৮৪ জন আশ্রয়প্রার্থনা করেছেন, যা ২০০২ সালে পরিসংখ্যান সংরক্ষণ শুরু হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই অবৈধভাবে চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছেন। ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর থেকে এ পর্যন্ত ৫২, ১৮৯ জন অভিবাসী ছোট নৌকায় চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ব্রিটেনে পৌঁছেছেন। কেবল গত সোমবারই পৌঁছেছেন ৬৫৯ জন। চলতি বছরের এখন পর্যন্ত মোট আগমন দাঁড়িয়েছে ২৮, ৯৪৭ জনে। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫০% বেশি (২০২৪ সালে ছিল ১৯,২৯৪) এবং ২০২৩ সালের তুলনায় ৪৭% বেশি (তখন ছিল ১৯,৭৪১)। আশ্রয়প্রার্থীদের বেশির ভাগ এসেছেন ইরান, ইরাক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং ইরিত্রিয়া থেকে। পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তিধর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও ২০০২ সাল থেকে দেশটি থেকে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইগ্রেশন অবজারভেটরির সিনিয়র গবেষক ড. পিটার ওয়ালশ স্কাই নিউজকে জানান, ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে সমস্যার মূল কারণ কূটনৈতিক সম্পর্কের ঘাটতি। তিনি বলেন, ‘এটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরও কঠিন হয়ে উঠছে। যেমন, কোনো আফগান আশ্রয়প্রার্থী প্রত্যাখ্যাত হলেও এ বিষয়ের জন্য বর্তমানে তালেবান সরকারের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের কোনো প্রত্যাবর্তন চুক্তি নেই।’ এমন পরিস্থিতিতে রিফর্ম ইউকে ক্ষমতায় এলে প্রথম সংসদেই প্রায় ৬ লাখ আশ্রয়প্রার্থীকে ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে।