সিডনির প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ক্যাসুলা পাওয়ার হাউজ অডিটোরিয়ামে গত শনিবার (২৮ জুন) অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলা সংস্কৃতির এক অসাধারণ আবহমণ্ডল—‘ভবের হাট’-এর নবম পর্ব। সিডনিপ্রবাসী বাউল গানের অনুরাগীরা এক মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় অভিভূত হন, যা যেন হয়ে ওঠে এক ঐন্দ্রজালিক অভিজ্ঞতা।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত বাজিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন জনপ্রিয় উপস্থাপক শাকিল চৌধুরী। পূর্ণ অডিটোরিয়ামে যেন এক অন্যরকম আবহ—প্রবাসে বসেও বাংলার গন্ধ, বাংলার মাটি ও মানুষের গান ছুঁয়ে দিলো সকলের মন।
‘ভবের হাট সিজন ৯’-এর সূচনা হয় ময়মনসিংহ গীতিকার ‘সখীগো আমার মন ভালো না’ থিম গান দিয়ে। অনুষ্ঠানটি পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও পরিচালনায় ছিলেন ফারিয়া আহমেদ। শাকিল চৌধুরীর প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় এবং অর্পিতা সোম চৌধুরীর কোরিওগ্রাফিতে মঞ্চে উঠে আসে এক মনোমুগ্ধকর গীতি-নাট্য-নৃত্যানুষ্ঠান, যা দর্শকদের নিয়ে যায় অতীত বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্যে।
রাজন নন্দীর আলো প্রক্ষেপণ, অর্পিতা সোম চৌধুরীর দলীয় পরিবেশনা এবং ঐতিহ্যবাহী বাউল গানের ছন্দে মুহূর্তেই সৃষ্টি হয় এক মায়াবী পরিবেশ, যা দর্শক-শ্রোতাদের আচ্ছন্ন করে রাখে অনুষ্ঠান জুড়ে।
দ্বিতীয় পর্বে আয়োজন করা হয় ‘গুণীজন সংবর্ধনা’। এ বছর আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার আত্তাবুর রহমান, সামাজিক ব্যাক্তিত্ব মো. লুৎফুর রহমান টিপু, বাংলা গানে রোকসান বেগম রত্নগর্ভা মা মালা ঘটক চৌধুরী, রত্নগর্ভা মা নিশাত আরা সিদ্দিক রিপা। সম্মাননা প্রদান করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সিরাজুস সালেকিন ও ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলের পৃষ্ঠপোষক নাজমুল আহসান খান।
গান পরিবেশন করেন বনফুল বড়ুয়া, লামিয়া আহমেদ, নিলাদ্রী চক্রবর্তী এবং ভবের হাটের কর্ণধার ফারিয়া আহমেদ। নৃত্য পরিবেশন করেন অর্পিতা সোম চৌধুরী ও তাঁর দল।
যন্ত্রসঙ্গীতে অংশ নেন: তবলায় বিজয় সাহা, গিটারে সোহেল খান ও বনফুল, অক্টোপ্যাডে আলী কাওসার, দোতারায় ফয়সাল সজীব এবং কী-বোর্ডে নিলাদ্রী চক্রবর্তী। শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিলেন সন ও রহমান।
মঞ্চসজ্জা ও প্রজেক্টর পরিচালনায় জাকী খন্দকার ও সুমন কবীর। ভলান্টিয়ার ছিলেন লিংকন, সুমন, শুভ, আবরার ও নাহিদ। শিল্পীদের রাতের খাবার সরবরাহ করে নওয়াব রেস্টুরেন্ট। স্পন্সর ওয়ান স্টপ বিল্ডারস ও মিন্টো ডিসকাউন্ট ফার্মাসী।
সমাপ্তি বক্তব্যে ফারিয়া আহমেদ আগামী বছর ভবের হাটের ১০ম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে আবারও সবাইকে আমন্ত্রণ জানান এবং বাংলা সংস্কৃতির প্রতি এমন ভালোবাসা ও অংশগ্রহণের জন্য সকল দর্শক, অতিথি, স্পন্সর ও শিল্পীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ