শিক্ষা উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমনের মাধ্যমে স্বার্থান্বেষী মহল বিশ্বকে ভয়াবহ পরিবেশগত দুর্যোগের মধ্যে ফেলেছে। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর কারখানা থেকে যে গ্যাস নির্গত হয়, তা বিশ্ব পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য কেবল সরকারের ওপর নির্ভর না করে সাধারণ মানুষকেও উদ্যোগ নিতে হবে।
সোমবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন স্কুল ক্যাম্পাস কনটেস্ট’ প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ১০টি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোকে ধন্যবাদ জানান শিক্ষা উপদেষ্টা। ভবিষ্যতে তারা এমন কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের তৈরি পোস্টারগুলোকে ‘মনোমুগ্ধকর’ বলে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এ ধরনের যৌথ অংশগ্রহণ শুধু মনোবল বৃদ্ধি করে না বরং ভবিষ্যতের পরিবেশ সচেতন সমাজ গঠনে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করে।
উপদেষ্টা রফিকুল আবরার জানান, ছেলেবেলাতেও তিনিও এ ধরনের প্রোগ্রামে অংশ নিতেন। সেগুলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে কাজের উদ্যম ও দায়িত্ববোধ তৈরি করত। এখনকার এই পরিবেশ সচেতনতামূলক উদ্যোগগুলো আগামী দিনে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন (বিএনসিইউ) এবং ইসলামিক ওয়ার্ল্ড এডুকেশনাল, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশনের (আইসেস্কো) যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. মজিবর রহমান।
আইসেস্কোর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. রাহিল কামার। তিনি সংস্থাটির ‘সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সেক্টর’-এর প্রধান।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল, পরিবেশ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের পরিবেশ পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি এবং বাস্তবমুখী উদ্যোগ গ্রহণে উৎসাহিত করা। ঢাকার ইউনেস্কো সদস্য ১০টি স্কুল এই কার্যক্রমে অংশ নেয়।
শিক্ষা সচিব মো. মজিবর রহমান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত অবক্ষয়ের প্রেক্ষাপটে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিবেশ সংরক্ষণে যে প্রচেষ্টা চলছে, এই প্রকল্প তারই অংশ।
অংশগ্রহণমূলক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পরিবেশ নিয়ে আরো গভীরভাবে ভাবতে শিখবে এবং স্কুল ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে তাদের পরিবেশবান্ধব চিন্তা-চেতনা সমাজেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও আশা প্রকাশ করেন।
বিডি প্রতিদিন/কেএ