অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফে গত এক বছরে প্রবালের যে পরিমাণ ক্ষয় হয়েছে, তা গত ৩৯ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি—বিশেষ করে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে। দেশটির সামুদ্রিক গবেষণা সংস্থা অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস এই তথ্য জানিয়েছে।
গবেষণা অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছুটা প্রবৃদ্ধি দেখা গেলেও এবার প্রবালের পরিমাণ এক-চতুর্থাংশ থেকে এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত কমে গেছে। ২০২৪ সালের গ্রীষ্মে প্রবালের রং ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া (যাকে ‘ব্লিচিং’ বলা হয়) এতটাই ব্যাপক ছিল যে, এটি পুরো রিফজুড়েই ছড়িয়ে পড়ে। এটি ছিল এখন পর্যন্ত রেকর্ডকৃত সবচেয়ে বড় পরিসরের প্রবাল ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়ার ঘটনা।
প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘমেয়াদি মনিটরিং প্রকল্পের প্রধান মাইক এমস্লি বলেন, গত ১৫ বছরে প্রবালের পরিমাণে যে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে, তা প্রমাণ করে যে এই মহাবিশ্বপ্রসিদ্ধ সামুদ্রিক ইকোসিস্টেম এখন চাপে রয়েছে।
গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ বিশ্বের সবচেয়ে বড় জীবন্ত সামুদ্রিক ইকোসিস্টেম, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ২,৪০০ কিলোমিটার। ২০১৬ সাল থেকে এটি পাঁচবার গ্রীষ্মকালে ব্যাপক তাপদাহের কারণে প্রবাল ফ্যাকাশে হওয়ার শিকার হয়েছে। তীব্র তাপের কারণে প্রবালগুলো তাদের রং হারিয়ে ফেলে এবং এতে তাদের বেঁচে থাকার ঝুঁকি বাড়ে।
বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ এখনও ইউনেস্কোর ‘বিপদাপন্ন’ তালিকায় না থাকলেও, সংস্থাটি পরামর্শ দিয়েছে এটিকে তালিকাভুক্ত করা উচিত। তবে অস্ট্রেলিয়া সরকার দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে আসছে যাতে রিফকে বিপদাপন্ন ঘোষণা না করা হয়। কারণ এটি দেশটির পর্যটনশিল্পে প্রতিবছর প্রায় ৬.৪ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৪.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) আয়ে অবদান রাখে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বিশ্বের অন্যতম এই প্রাকৃতিক ঐতিহ্য অচিরেই হারিয়ে যেতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল