ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতা আছে হামজা চৌধুরীর। লিস্টার সিটির সেরা একাদশের নিয়মিত ফুটবলার তিনি। কানাডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলার সামিত সোম। ক্যাভালরির জার্সিতে দাপট দেখান প্রায়ই। ইতালিয়ান ফুটবলে পরিচিত নাম ফাহামিদুল ইসলাম। জায়ান আহমেদ এসেছেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। একের পর এক বিশ্ব থেকে তন্ন তন্ন করে খুঁজে সেরা ফুটবলারদের জড়ো করছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তবে এতকিছুর পরও মাঠের ফলাফল আগের মতোই। নামিদামি ফুটবলাররা এসেও কেন ফুটবলের গতিপথ বদলাতে পারছেন না? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছেন না স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। ফুটবলপাড়ায় জোর গুঞ্জন, হামজাদের মতো ফুটবলারদের জন্য আরও উঁচু দরের কোচ প্রয়োজন। এ প্রশ্নটা এখনো অমীমাংসিতই রয়ে গেছে। বাফুফে আপাতত কাবরেরার কাঁধেই জাতীয় দলের ভার দিয়ে ফল পেতে চায়। আজ আরও একবার স্প্যানিশ এ কোচের পরীক্ষা। হংকংয়ের কাই টাক স্টেডিয়ামে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে নামছেন হামজা-জামালরা। প্রতিপক্ষ হংকং চায়না।
দিন কয়েক আগে ঢাকার মাঠে ৭ গোলের এক দারুণ ফুটবল ম্যাচ উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ-হংকং চায়না। ম্যাচে বাংলাদেশ ৪-৩ গোলে হেরে গেছে। সেই পরাজয়ের কাবরেরার পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে উঠেছে নানা রকমের অভিযোগ। সেসব অভিযোগ আপাতত বাকির খাতায় তুলে রেখে আজকের ম্যাচ নিয়েই ভাবছেন সবাই। কাবরেরাও অতীত পেছনে ফেলে হংকংয়ের বিপক্ষে সফল হওয়ার মন্ত্র জঁপছেন। এ কারণেই হংকংয়ের বিপক্ষে হোম ম্যাচ খেলে তড়িঘড়ি করে চলে গেছেন অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে। সেখানে তিন দিন অনুশীলন করিয়েছেন কাবরেরা। যদিও হোটেল থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অনুশীলন করতে গিয়ে বেশ বিপত্তিতেই পড়েছে বাংলাদেশ দল। তবে একটু আগে হংকং যাত্রার কারণ হিসেবে বেশ ভালো যুক্তিই দাঁড় করিয়েছেন স্প্যানিশ কোচ। অ্যাওয়ে ম্যাচের জন্য নিজেদের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে চায় বাংলাদেশ।
গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে হাভিয়ের কাবরেরা আরও একবার আশার কথা শোনালেন। স্বপ্ন দেখালেন ম্যাচ জয়ের। তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেদের প্রস্তুত করেছি। আরও একটা বড় ম্যাচ অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।’ হংকং সম্পর্কে কাবরেরা আগে বলেছিলেন, বাংলাদেশের মানেই আছে দলটি। এমনকি সিঙ্গাপুরের ব্যাপারেও একই কথা বলেছিলেন তিনি। তবে গতকাল বললেন, হংকং অনেক শক্তিশালী একটা দল। এ দলের বিপক্ষে বাড়তি প্রস্তুতি নিয়েই খেলতে হবে বাংলাদেশকে। আগের ম্যাচগুলোতে বাংলাদেশ যেসব বাধা অতিক্রম করতে পারেনি সেগুলোই অতিক্রম করতে চান কাবরেরা। তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যারিয়ারটা পাড় হতে হবে।’ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচে সব বাধা অতিক্রম করার ব্যাপারে আশাবাদী।
হংকংয়ের মাটিতে ২০০৬ সালে খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ২-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। দীর্ঘ প্রায় ১৯ বছর পর হংকংয়ের মাটিতে খেলতে গেছে বাংলাদেশ। এবার কি ফলাফল অপেক্ষা করছে? এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব থেকে কার্যত বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ। এখন আর হারাবার কিছু নেই। অর্জনের খাতায় জয় ছাড়া যোগ করার কিছু নেই। এমন এক ম্যাচে কী পরিকল্পনা নিয়ে দল সাজাবেন কোচ? হামজার সঙ্গে একাদশে থাকতে পারেন সামিত, ফাহামিদুল, জায়ানরা। গত ম্যাচে জায়ান শেষ কয়েক মিনিট খেলেই সবার মন কেড়েছেন। এ ম্যাচে তাকে দেখা যেতে পারে শুরুতেই। এমনকি অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার প্লেয়িং টাইমও হয়তো বেড়ে যাবে!