রাজধানীতে ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি পেতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ক্যান্টনমেন্টের একটি ওয়ার্কশপের মেকানিক মো. বাবুল মিয়া ১ লাখ টাকা চুক্তিতে তিন বন্ধুকে ভাড়া করে শ্বাসরোধে স্ত্রী বীথি আক্তার বিলকিসকে হত্যা করেন! গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উত্তরা বিভাগের ডিসি মো. মহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে হত্যাকান্ডে জড়িতদের মধ্যে নিহতের স্বামী বাবুল ও তার সহযোগী সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা থেকে বাবুল এবং একই দিন মিরপুর-১২ নম্বর সেকশনের কালাপানি এলাকা থেকে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা দুজন হত্যাকান্ডে র দায় স্বীকার করেছেন। ডিসি আরও জানান, ১৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পর বিলকিস নিখোঁজ হন। পরে তার মা মনোয়ারা বেগম এ বিষয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ১৮ সেপ্টেম্বর সকালে তুরাগ থানার ১৭ নম্বর সেক্টরের খেলার মাঠে কাশবনের মধ্যে অজ্ঞাত এক নারীর লাশ পাওয়া যায়। লাশটি বিলকিসের বলে শনাক্ত করেন তার মা মনোয়ারা বেগম। এ ঘটনায় তুরাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। মামলার পর তুরাগ থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে হত্যাকান্ডে জড়িত চারজনকে শনাক্ত করা হয়। পলাতক দুজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
পুলিশ কর্মকর্তা মহিদুল জানান, নিহত বিলকিস এবং তার স্বামী বাবুল প্রায় ৬ বছর ধরে দাম্পত্য কলহে ভুগছিলেন। এর পেছনে প্রধান কারণ ছিল ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা ঋণ। বাবুল ক্যান্টনমেন্টের একটি ওয়ার্কশপে চাকরি করে মাসে প্রায় ৩১ হাজার টাকা বেতন পান। যার বেশির ভাগই ঋণের সুদের টাকা দিতে খরচ হয়ে যেত। এই নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে তার প্রায়ই ঝগড়া হতো। সুদের পাওনাদারদের কারণে তার স্ত্রী ঠিকমতো ঘুমাতে বা খেতে পারতেন না এবং এ নিয়ে প্রায়ই বকাঝকা করতেন। এ ছাড়া স্ত্রীর বিরুদ্ধে তার ভাই বা অন্য কাউকে টাকা দেওয়ার সন্দেহও ছিল, যা তাদের কলহকে আরও চরম পর্যায়ে নিয়ে যায়। গত ২-৩ মাস আগে তিনি তার স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন এবং সম্রাটসহ আরও দুজনের সহায়তায় হত্যাকান্ডটি ঘটান। এরপর হত্যাকারীদের কিস্তিতে টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন বাবুল।