২০ হাজারের অধিক বাংলাদেশিসহ ১৫ লক্ষাধিক অভিবাসীর জন্য চরম এক দুঃসংবাদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বোর্ড অব ইমিগ্রেশন আপিল কোর্ট’। ৫ সেপ্টেম্বর বিচারপতি কিথ ই হানসাকার প্রদত্ত রুলিংয়ে মেক্সিকো হয়ে বেআইনি পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর যারা অ্যাসাইলাম প্রার্থনা করে ‘প্যারল’-এ মুক্ত ছিলেন, তাদের সে অধিকার বাতিল করা হয়েছে।
আইসের (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টোড এম লিয়ন্স সব ফিল্ড অফিসকে নির্দেশ দিয়েছেন, কোনো ধরনের ইন্সপেকশন ছাড়া অর্থাৎ বেআইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারীরা অ্যাসাইলামের প্রার্থনা করলেও প্যারলে মুক্তি পাবে না। অ্যাসাইলামের সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে ডিটেনশন সেন্টারে থাকতে হবে এবং এ বিষয়টি নির্ধারণ করবেন অ্যাসাইলাম অফিসার। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন জোনাথন জেভিয়ার ইয়াজুরে হুরটাদো নামক ভেনেজুয়েলার একজন নাগরিক, যিনি ২০২২ সালে চোরাইপথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। গত বছর প্রেসিডেন্ট বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত ভেনেজুয়েলারের নাগরিকদের জন্য ‘টিপিএস’ (টেম্পরারি প্রটেকটেড স্ট্যাটাস)’-এর নির্দেশ দিয়েছিলেন যার মেয়াদ শেষ হয়েছে এ বছরের ২ এপ্রিল। এরপরই তাকে আইস এজেন্টরা গ্রেপ্তার করে। পরে তিনি ইমিগ্রেশন কোর্টে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু বিচারক তা নাকচ করলে তিনি ‘বোর্ড অব ইমিগ্রেশন আপিল’ কোর্টে গিয়েছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি কিথ ই হানসাকার প্রদত্ত রুলিংয়ে বলেছেন, অ্যাসাইলামের আবেদনের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তাকে ডিটেনশন সেন্টারেই থাকতে হবে। এ সংবাদটি টলটলায়মান কমিউনিটিকে আরও নাজুক অবস্থায় নিপতিত করেছে। কারণ ২০২১ সালের জানুয়ারিতে বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মেক্সিকো হয়ে ২২ লাখের অধিক বিদেশি জোরপূর্বক যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছে।
এর প্রায় সবাই ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ চেয়ে প্যারলে মুক্ত ছিলেন। তারা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বন্ড প্রদান করে মুক্ত ছিলেন। ওয়ার্ক পারমিট পেয়ে কাজকর্মও করছেন প্রায় সবাই। এমনি অবস্থায় ইমিগ্রেশন ইস্যুতে নির্বাহী বিভাগের সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা ‘বোর্ড অব আপিল’ এমন সিদ্ধান্ত দেওয়ায় আরেক দফা ভীতিকর পরিস্থিতিতে নিপতিত হলেন অভিবাসীরা।