হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেছে অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি (ওটিএ) ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’। প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন এর প্রতিষ্ঠাতা সালমান বিন রশিদ শাহ সায়েম। সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তারও জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তবে তারা কোন দেশে পালিয়ে আছেন তা এখনো জানতে পারেনি পুলিশ।
প্রতিষ্ঠানটির অ্যাপ চালু থাকলেও বন্ধ রয়েছে ওয়েবসাইট। বন্ধ রয়েছে গ্রাহক সেবা কেন্দ্রও। একই সঙ্গে বন্ধ রাজধানীর মতিঝিলে থাকা ফ্লাইট এক্সপার্টের কার্যালয়। এদিকে ভয়াবহ এ প্রতারণার ঘটনায় রাজধানীর মতিঝিল থানায় মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগী। ওই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ফ্লাইট এক্সপার্ট ইস্যুতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। দুজন পলাতক, তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। পলাতকদের মধ্যে রয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির এমডি সালমান বিন রশিদ শাহ সায়েম, তার বাবা এম এ রশিদ শাহ সম্রাট। গ্রেপ্তার হয়েছেন- হেড অব ফিন্যান্স সাকিব হোসেন, চিফ কমার্শিয়াল সাঈদ আহমেদ এবং চিফ অপারেটিং অফিসার এ কে এম সাদাত হোসেন। বিপুল সরকার নামে এক গ্রাহক শনিবার রাতে মতিঝিল থানায় মামলাটি করেন। জানা যায়, বিমানের টিকিট বিক্রির মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজারে জনপ্রিয়তা পায় ফ্লাইট এক্সপার্ট। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় কম দামে টিকিট পাওয়া যেত এই প্ল্যাটফর্মে। এক পর্যায়ে ভ্রমণসংক্রান্ত প্রায় সব ধরনের সেবা যেমন- হোটেল বুকিং, ট্যুর প্যাকেজ সেবাও নিয়ে আসে ফ্লাইট এক্সপার্ট। ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির বিনিয়োগের খবর পাওয়া যায়। এর আগে এমডি সালমান পলাতক হওয়ার পর ফ্লাইট এক্সপার্টের পক্ষ থেকে সাঈদ আহমেদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডিতে সাঈদ অভিযোগ করেন, এমডি সালমান সংস্থার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বার্তা পাঠিয়ে জানিয়েছেন যে তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। অফিসে গিয়ে তিনি সালমানকে অনুপস্থিত দেখেন। গ্রাহকদের অর্থসংক্রান্ত লেনদেন এখন ঝুঁকিতে রয়েছে এবং কিছু গ্রাহক কর্মীদের হুমকি দিচ্ছেন। শনিবার ফ্লাইট এক্সপার্টের ওয়েবসাইট বন্ধ দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। অনেক গ্রাহক তাদের বুকিং ও ভবিষ্যৎ ভ্রমণ পরিকল্পনা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।