নাটোরের বড়াইগ্রামের রোলভা গ্রামে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় প্রায় দুইশ’ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ঘরের মেঝে, উঠান ও টয়লেট পানির নিচে ডুবে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। রান্না-বান্না বন্ধ হয়ে গেছে, নিরাপদ পানিরও নেই কোনো ব্যবস্থা।
স্থানীয়রা জানান, বছর খানেক আগে রোলভা গ্রামের কাঁচা রাস্তাটি পাকা করার সময় পানি নিষ্কাশনের জন্য থাকা চারটি চোঙ বন্ধ করে দেওয়া হয়, কিন্তু সেখানে কোনো কালভার্ট স্থাপন করা হয়নি। ফলে বর্ষায় টানা বৃষ্টিতে পানি জমে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। এতে প্রায় সব পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অনেক শিক্ষার্থী স্কুল-মাদরাসায় যেতে পারছে না, কেউ কেউ ঘরবাড়ি ছেড়ে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো গ্রাম পানিতে ডুবে আছে। ঘরে বসবাসের অযোগ্য পরিবেশ তৈরি হয়েছে। গবাদি পশুগুলো খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টিতে ভিজে কিংবা রোদে পুড়ে কষ্ট করছে। অন্তত ৩০টি বাড়ি খালি পড়ে আছে। ফসলি জমি, পানের বরজ, কলা, লেবু ও পেঁপের বাগান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কবরস্থানও হাঁটুসমান পানির নিচে।
ভুক্তভোগী ফরিদুল ইসলাম বলেন, “২০-২৫ দিন ধরে ঘরে পানি। রান্না-বান্না বন্ধ, চুলা ডুবে গেছে। কখনও মুড়ি, কখনও চা-বিস্কুট খেয়েই দিন কাটছে।”
আব্দুস সামাদ বলেন, “বিষাক্ত সাপের ভয়ে ঘরে থাকতে পারি না।”
মিরু প্রামাণিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এক মাস ধরে রান্নাঘরে পানি। সবাই বিপদে, কে কাকে খাওয়াবে?”
গৃহবধূ রোকেয়া খাতুন বলেন, “টয়লেট পানির নিচে। মহিলারা মারাত্মক দুর্ভোগে আছি। নোংরা পানিতে হাঁটাহাঁটি করে চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছি।”
কৃষক মজনু শাহ বলেন, “আমার দেড় বিঘা পানের বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকের কলা ও লেবুর বাগানও মরে যাচ্ছে।”
ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেনের দাবি, “রাস্তার দুটি জায়গা কেটে পানি বের করে দিলে আপাতত জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলবে। স্থায়ী সমাধানের জন্য ছোট একটি কালভার্ট স্থাপন করা জরুরি।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, বিষয়টি আজই জেনেছি। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল